নয়াদিল্লি: গত দেড় বছরে দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারির প্রসঙ্গ তুলে খোদ নরেন্দ্র মোদীকে বেনজির ঢঙে আক্রমণ করলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। এর আগে সম্ভবত এতটা চড়া সুরে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেননি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। আমআদমি পার্টি (আপ)-র ওপর ‘অত্যাচারের চক্র’ চলছে, তার পিছনে ‘মাথা’ মোদীই, এহেন মন্তব্য করে কেজরীবালের দাবি, প্রধানমন্ত্রী তাঁর দলকে ‘মুছে দিতে’ চান!


দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রায় ১০ মিনিটের এক ভিডিও ভাষণে তিনি বলেছেন, দলের সব স্বেচ্ছাসেবক, বিধায়ক ও মন্ত্রীদের এটাই বলছি, খুবই কঠিন সময় চলছে। ভাবুন, পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করুন। আগামী দিনে কিন্তু পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। মোদী যা খুশি করতে পারেন। আমাদের খুন করাতে পারেন। আমাকেও খুন করাতে পারেন। সুতরাং বাড়িতে কথা বলুন। চরম আত্মত্যাগের জন্য তৈরি থাকুন। সব বিধায়ককেই জেলে যেতে হতে পারে। রাজি থাকলে আমাদের সঙ্গে আসুন, মনে ভয় থাকলে চলে যান। তিনি এও বলেন, মোদী যাবতীয় কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে বসে আছেন। আপকে শেষ করে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

 

অতীতে মোদীকে ‘ভীতু’, ‘সাইকোপ্যাথ’, কিছু বলতেই বাকি রাখেননি কেজরীবাল। আর আজ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি যুক্তি-ভাবনার বদলে শুধু ক্রোধের বশে সব সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেন, তবে বিপদে পড়বে দেশ। নিজের দলের ১০ বিধায়কের গ্রেফতারি, এক বিধায়কের বিরুদ্ধে আয়কর দফতরের হানা, মিথ্যা অভিযোগ তুলে ২১ এমএলএ-র বিধায়ক পদ খারিজের চেষ্টার প্রসঙ্গ তুলে কেজরীবাল বলেন, আমার কাছে সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হল, দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি ক্রোধের বশে সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেন, তবে ক্ষতি দেশের। আমাদের বিধায়কদের গ্রেফতারি গুরুত্বপূর্ণ নয়, তার চেয়েও জরুরি প্রশ্ন হল, দেশ তাঁর হাতে নিরাপদ কি?

কেজরীবাল বলেন, অত্যাচারের চক্র চলছে। আমি ভাবি, কেন এমন হচ্ছে। লোকে প্রশ্ন করে, কেন আমি মোদীজীকে দুষছি। তাহলে আমি জানতে চাই, সিবিআই, আয়কর হানার পিছনে মাথাটি কে? একটা মাথা তো থাকতে হবে। অমিত শাহ, মোদীজী, পিএমও। সবাই তো আছে।মাথাটা কে? কাছের লোকজন বলেন, মোদীজী আমাদের ওপর প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন। যুক্তি দিয়ে ভাবছেন না তিনি। কেননা রোজ রোজ গ্রেফতারির মধ্যে কোনও যুক্তি থাকে না। বিশেষ করে যখন গ্রেফতারির কয়েক দিনের মধ্যেই জামিন হয়ে যাচ্ছে, প্রমাণ হচ্ছে না কিছুই।