নয়াদিল্লি: পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের জন্যই কিষাণ নিধির প্রকল্প থেকে বাংলার কৃষক বঞ্চিত রয়েছেন বলে সরাসরি অভিযোগ তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।


দেশের কৃষকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল কনফারেন্স করলেন নরেন্দ্র মোদি। ৯ কোটি কৃষকের অ্যাকাউন্টে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার পরের কিস্তির ১৮ হাজার কোটি টাকা পাঠান প্রধানমন্ত্রী। সুইচ টিপে প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান মোদি।


সেখানেই তিনি বলেন, ‘আজ কিষাণ নিধির টাকা সরাসরি পৌঁছয় কৃষকের অ্যাকাউন্টে। ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকার বেশি এই প্রকল্পে পেয়েছেন চাষি। কোনও দুর্নীতি, কোনও কাটমানি নেই এর পিছনে।’


এরপরই সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘সব রাজ্য টাকা পায়, শুধু পায় না বাংলা। রাজ্যের কৃষক ভাইয়েরা যোজনার টাকা পাচ্ছেন না।’


তিনি মনে করিয়ে দেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে টাকা পাচ্ছেন না বাংলার কৃষকরা। বলেন, ‘এ কথা দেশের সামনে বলতে আমার কষ্ট হচ্ছে। ‘ এই রাজনৈতিক বিচারধারার জন্যই বাংলার এমন অবস্থা।’


তাঁর প্রশ্ন, ‘কেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা এই নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন না?’ তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস কেন পঞ্জাবে গিয়ে আন্দোলনের পাশে? রাজ্যের কৃষকদের অবস্থা ফেরাতে কেন যোজনার সুবিধা নিচ্ছেন না?’


তৃণমূলকে অভিযুক্ত করে মোদি বলেন, ‘এই দল বাংলাকে বরবাদ করেছে, এবার দিল্লির অসুবিধা করছে। স্রেফ গুজব, মিথ্যা কথা বলে কৃষকদের ভয় দেখানো হচ্ছে। গণতন্ত্রের কথা না বলে এই সব দল নিজেদের স্বার্থ দেখছে।’


বিরোধীদের উদ্দেশ্যে মোদির বার্তা, ‘কৃষকদের উল্টোপাল্টা বোঝাবেন না। এই সব দল ও আগের সরকারের জন্য কৃষিতে উন্নতি হয়নি। গরিব কৃষক এদের জন্য আরও গরিব হয়েছে।’


মোদি মনে করিয়ে দেন, ‘২০১৪ থেকে আমরা নতুন রণকৌশল নিয়ে কাজ করছি। যৎসামান্য প্রিমিয়ামে প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমার সুবিধা চাষিদের। ৮৭ হাজার কোটি টাকা বিমার থেকে পেয়েছেন চাষিরা।’


প্রধানমন্ত্রী যোগ করেন, ‘ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করার কথা আগেই বলা হয়েছিল। ফসল বেচার জন্য আজ কৃষকরা বিকল্প মান্ডি পাচ্ছেন। অনলাইনে ফসল বেচতে শুরুও করেছেন কৃষকরা।’


মোদি আরও বলেন, ‘আজ কৃষকরা পেয়েছেন পাকা ঘর, শৌচালয়। দিনে ৯০ পয়সায় ৬০ বছরে মিলবে ৩ হাজারের মাসিক পেনশন। ছোট কৃষকরা আরও সহজে ব্যাঙ্ক থেকে পাচ্ছেন ঋণ। নিজেদের ফসল যেখানে খুশি বেচতে পারেন চাষিরা। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যেও আপনারা নিজের ফসল বেচতে পারেন।’


মোদির প্রশ্ন, ‘এত অধিকার পাচ্ছেন কৃষকরা, এতে অন্যায় কি আছে? কেউ বলছেন এমএসপি থাকবে না, কেউ বলছেন মান্ডি বন্ধ হবে। নতুন আইনে কৃষকদের কোনও জরিমানা দিতে হবে না। চুক্তি অনুযায়ী কৃষককে টাকা দিতে বাধ্য থাকবেন চুক্তিকারীরা।’


মোদি বলেন, ‘ সবচেয়ে বেশি দুধ উৎপাদন হয় ভারতে। সেখানে তো ব্যবসায়ীরা আগে থেকেই আছেন, অসুবিধা হয়েছে? পোলট্রি ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরাও তো, যেখানে খুশি বেচেন। বলেন, কৃষি ক্ষেত্রেও আমরা সেটাই চাই। কৃষি আন্দোলনের আড়ালে কেন অন্য আন্দোলনে উস্কানি?
কেন হাইওয়েতে টোল আদায়ের বিরোধিতা।’