লখনউ:  উত্তরপ্রদেশে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের জন্যে আজই সেখানে গিয়ে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুকে তাঁর জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানিয়ে মোদী তাঁর নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে ভাষণ শুরু করেন। মোদীর এই সিদ্ধান্তের জন্যে যাঁরা তাঁর সমালোচনা করেছেন, তাঁদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। মোদীর দাবি, তাঁর এই সিদ্ধান্তে সাময়িক সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু তাঁদের এই স্বার্থত্যাগ জলাঞ্জলি যাবে না। আমজনতার প্রত্যেককে আশ্বস্ত করে মোদীর দাবি, প্রত্যেক মানুষের ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা একেবারে নিরাপদ রয়েছে এবং প্রত্যেক গ্রাহক এরজন্যে সুদও পাবেন।


মোদী তাঁর ভাষণে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দিকে আঙুল তুলে বলেন, তাঁর জমানায় গরিব মানুষ শান্তিতে ঘুমোচ্ছে, কালো টাকার কারবারিদেরই ঘুমের ওষুধ খেতে হচ্ছে। মোদী মনে করেন, তাঁর এই পদক্ষেপে দুর্নীতিগ্রস্থদের আটকানো যাবে, এবং তিনিই পণ্ডিত নেহরুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করার দায়িত্ব নিয়েছেন। মোদী তাঁর বক্তব্য রাখতে গিয়ে আরও বলেন, কংগ্রেস কীভাবে তাঁর দিকে দুর্নীতির আঙুল তুলছে, যেখানে ওই দলের প্রায় সব নেতাই দুর্নীতিগ্রস্থ। গাজিপুরের ওই সভায় মোদী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, আমাদের দেশে টাকার অভাব নেই, কিন্তু সেই সমস্ত টাকার কোনও হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। এক শ্রেণীর মানুষের হাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে, আর এক শ্রেণী অর্থাভাবে ভুগছে। তাই তাঁর দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে বার্তা আপনারা এই সমস্যাটা একটু মানিয়ে নিন, দুর্নীতি থেকে মুক্তি ঘটবেই। এটিএম সমস্যাও শীঘ্রই মিটে যাবে বলে দাবি করেছেন মোদী। সেখানে আজ বা আগামীকাল থেকেই বড় নোট পাওয়া যাবে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার মাইক্রো এটিএম ব্যবহারেরও ভাবনা চিন্তা করছে।

মোদী আরও বলেন, তাঁর সিদ্ধান্ত একটু কড়া হলেও, তিনি দারিদ্র দেখেছেন, তাই তিনি তাঁদের অবস্থা বুঝতে পারছেন। তবে ২০১৪ সালের পর দেশবাসী যে ফের তাঁর ওপর ভরসা রাখছেন, তাই তিনি খুশি। এদেশে দুর্নীতিপরায়ণদের কোনও জায়গা নেই, এবং তাঁদের শিক্ষা দিতে তাঁর এই কোঠর পদক্ষেপ।

তবে মোদীর নিশানায় রয়েছেন সেই রাজনৈতিক দলগুলো যাঁরা নোটের মালা করে গলায় পড়তেন। প্রত্যেকের বাড়ি গিয়ে কালো টাকা খুঁজে বের করা সম্ভব নয়, কিন্তু একরাতের মধ্যে ৫০০-১০০০ নোট কাগজে পরিণত হওয়ায় বিপাকে কালো বাজারের কারবারিরা, দাবি মোদীর। গঙ্গায় যাঁরা নোট ভাসিয়ে দিয়ে বেঁচে যাবেন ভাবছেন, তাঁরা মোটেই মুক্তি পাবেন না, হুঁশিয়ারি মোদীর। মোদীর আশা আগামী ৫০ দিনের মধ্যে এই পদক্ষেপের সুফল পাবেন দেশবাসী এবং তাঁর জন্যে অর্থদফতর এবং ব্যাঙ্ক কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। এই মহাযজ্ঞে যাতে তিনি সফল হন সেজন্যে মানুষের থেকে আশীর্বাদও চেয়ে নিয়েছেন মোদী।

মোদীর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বললেন দেখুন এখানে ক্লিক করে

“প্রধানমন্ত্রীর ‘গরিবরা শান্তিতে ঘুমোচ্ছে’ দাবি গরিবদের অপমান”, টুইটারে জবাব মমতার