নয়াদিল্লি: চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ অব্যাহত কংগ্রেসের। দলের সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী বলেছেন ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চিন অনুপ্রবেশ করেনি। কিন্তু প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী তা নিয়ে আলোচনা বজায় রেখেছেন। আজ যখন আমরা আমাদের শহিদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করছি, তখন দেশ জানতে চায়, কেন ও কীভাবে (গালওয়ান উপত্যকায়) আমাদের ২০ জন সেনার মৃত্যু হল’।

সনিয়া ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘চিনের সঙ্গে দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত করার দায় এড়াতে পারে না সরকার। লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে সারা দেশকে অবগত করুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি'।

লাদাখে যে সেনা জওয়ানরা জীবন বলিদান দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কংগ্রেসের প্রচার অভিযানের অঙ্গ হিসেবে এই ভিডিওতে সনিয়া প্রশ্ন তুলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দাবি মতো চিন যদি ভারতের ভূখণ্ড দখল না করে থাকে, তাহলে দেশের সেনাদের শহিদ হতে হল কেন’।

‘স্পিক আপ ফর আওয়ার জওয়ান’ অভিযানের অঙ্গ হিসেবে ভিডিও বার্তায় সনিয়া বলেছেন, ভারত-চিন সীমান্তে যখন সংকটজনক পরিস্থিতি, তখন কেন্দ্র সীমান্ত সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে দায় এড়াতে পারে না।

সনিয়া বলেছেন, ‘যখন প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ভারতীয় ভূখণ্ডে কোনও অনুপ্রবেশ হয়নি, তখন স্যাটেলাইট ছবি দেখে বিশেষজ্ঞরা আমাদের ভূখণ্ডে চিনের বাহিনীর উপস্থিতির কথা বলছেন’।

সনিয়ার প্রশ্ন, ‘লাদাখে চিনের কাছ থেকে আমাদের জমি মোদি সরকার কীভাবে ও কখন ফেরাবে? লাদাখে আমাদের ভৌগলিক অখণ্ডতা কি চিন লঙ্ঘন করেছে? সীমান্তের পরিস্থিতি সম্পর্কে দেশকে কি অবগত করবেন প্রধানমন্ত্রী?’

কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরীও কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন। তিনি বলেছেন, নিজেদের কৌশলগত সাঙ্ঘাতিক ভুলের কথা লুকোতে প্রধান বিরোধী দলকে আক্রমণ করা হচ্ছে। এর পরিবর্তে বরং সরকারের চিনকে পাল্টা আঘাত হানা ও গালওয়ান উপত্যকায় ভূখণ্ড পুণর্দখলের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

প্রত্যাঘ্যাতের ব্যাপারে মোদি সরকারের সিদ্ধান্তহীনতার সুযোগ চিন নিচ্ছে বলে অধীর দাবি করেছেন।

কংগ্রেস জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে সমঝোতা করেছে বলে যে অভিযোগ বিজেপি করেছে, তার প্রমাণ দেওয়ার চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দিয়েছেন বহরমপুরের সাংসদ। অধীর বলেছেন, এই অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন।

অধীর বলেছেন, নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে, হিমালয়প্রমাণ কৌশলগত মহাভুল ঢাকতে বিজেপি কংগ্রেসকে আক্রমণ করছে। ইতিহাস সম্পর্কে কোনও শ্রদ্দা নেই বিজেপির। না হলে তারা কখনওই বলত না যে, কংগ্রেস জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করেছে।

অধীর বলেছেন, ১৯৮৪-তে অপারেশন মেঘদূতের মাধ্যমে ইন্দিরা গাঁধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সিয়াচেন ছিনিয়ে নিয়েছিল। ১৯৭১-এ এই কংগ্রেসই পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ তৈরি করেছিল।