উধমপুর: আগামীকাল জম্মু-কাশ্মীরের উধমপুর জেলায় দেশের দীর্ঘতম সুড়ঙ্গপথের উদ্বোধন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার ২৪ ঘণ্টা আগেই জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত হল ভূ-স্বর্গ। শ্রীনগরের উপকণ্ঠে সেনা কনভয়ে জঙ্গিদের গুলিতে আহত হলেন অন্তত ২ জন জওয়ান। সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি চালালেও, জঙ্গিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। তারা কাছাকাছি কোথাও লুকিয়ে রয়েছে বলে সন্দেহ করছেন জওয়ানরা। জঙ্গিদের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি।

সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, বেমিনা অঞ্চলে পারিমপপোরা পঠানচক বাইপাস রোডে একটি হাসপাতালের কাছ দিয়ে সেনা কনভয় যাওয়ার সময় আচমকা গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। এই হামলার কিছুক্ষণ আগেই শ্রীনগরের লাল চকে বাণিজ্যকেন্দ্রেও গুলি চলে। ফলে আতঙ্ক ছড়ায়। তবে পরে জানা যায়, এক মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি মুখোশ পরে একটি হোটেলে ঢুকে পড়ে। জঙ্গি সন্দেহে তাকে আটকানোর জন্যই শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ। ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। এরপরেই জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া শুরু হয়। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানোর পাশাপাশি লঙ্কাগুঁড়োও ছিটিয়ে দেয় পুলিশ।

সুড়ঙ্গপথের উদ্বোধন উপলক্ষে উপত্যকায় আগেই জারি হয়েছিল হাই অ্যালার্ট। জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর জন্য ত্রি-স্তরীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিজিপি এসপি বৈদ নিরাপত্তা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে কোনও চিন্তা নেই। উধমপুর-জম্মুতে হাই অ্যালার্ট জারি হয়েছে। নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে। সুড়ঙ্গপথের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী যেখানে জনসভায় ভাষণ দেবেন, সেই অঞ্চল সিল করে দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বলেছেন, ‘সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং দেশের মানুষকে এই সুড়ঙ্গপথ উৎসর্গ করছেন। এটা জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের কাছে গর্বের বিষয়। এই সুড়ঙ্গপথের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ২৭ লক্ষ টাকার এবং বছরে প্রায় ৯৯ কোটি টাকার জ্বালানি তেল সাশ্রয় হবে।’

জিতেন্দ্র আরও বলেছেন, চেনানি থেকে নাশরির দূরত্ব এতদিন ছিল ৪১ কিমি। এই সুড়ঙ্গপথের ফলে সেই দূরত্ব কমে হয়েছে মাত্র ১০.৯ কিমি। এই সুড়ঙ্গপথে জম্মু থেকে শ্রীনগর যেতে সময় লাগবে মাত্র ২ ঘণ্টা। সব আবহাওয়াতেই ব্যবহার করা যাবে এই পথ। তুষারপাত বা বৃষ্টির ফলে হাইওয়ে বন্ধ থাকলে বিকল্প হয়ে উঠবে এই সুড়ঙ্গপথ। এর ফলে বাণিজ্য এবং রাজস্ব আদায় বাড়বে। একইসঙ্গে পর্যটনের ক্ষেত্রেও লাভ হবে।