নয়াদিল্লি:  আজ মুম্বইতে এক অনুষ্ঠানে নৌ বাহিনীতে ভারতীয় সংস্করণে তৈরি স্করপিন শ্রেণীর সাবমেরিন আইএনএস কলভারী অন্তর্ভূক্ত করা হল। নৌ বাহিনীতে এই সাবমেরিনের অন্তর্ভূক্তির পর দেশবাসীর উদ্দেশ্যে সেটি  উৎসর্গ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।






এই সাবমেরিনের নাম প্রথম ফক্সটর্ট ঘরাণার সাবমেরিনের নামানুসারে হয়েছে। নৌ বাহিনীতে এই সাবমেরিনের প্রথম অন্তর্ভূক্তিকরণ হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। ভারতে স্করপিন শ্রেণীর এই সাবমেরিন তৈরি করল মাজাগাঁও ডকইয়ার্ড লিমিটেড নামে এক সংস্থা। সাবমেরিন তৈরির জন্যে প্রযুক্তি আনা হয়েছে ডিসিএনএস নামের ফ্রান্সের এক সংস্থার থেকে। ভারত ও ফ্রান্সের প্রযুক্তিগত মেলবন্ধনে তৈরি এই সাবমেরিন প্রসঙ্গে মোদীর মন্তব্য, এরসঙ্গে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হল এবং এই পার্টনারশিপ যে ভবিষ্যতে আরও বাড়বে সেকথা বলাই বাহুল্য।

প্রসঙ্গত, আইএনএস কলভারী হচ্ছে ছটি স্করপিন শ্রেণীর সাবমেরিনের মধ্যে প্রথম যেটা তৈরি করল মাজাগাঁও ডকইয়ার্ড লিমিটেড। ভারতীয় নৌ বাহিনীর প্রজেক্ট ৭৫-এর আওতায় এই সাবমেরিনটি তৈরি করা হয়েছে।  দীর্ঘ সতেরো বছরের বিরতির পর ফের কোনও সাবমেরিন ভারতীয় সংস্করণে তৈরি করে ভারতীয় নৌ বাহিনীতে অন্তর্ভূক্ত করা হল। এই সাবমেরিন অন্তর্ভূক্তির সঙ্গে ভারতীয় নৌ বাহিনী মোট ১৬টি সাবমেরিন পেল, যদিও সংখ্যাটা চিন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেকটাই পিছনে। চিনের কাছে এখন ৬৮টি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মোট ৭০ টি সাবমেরিন রয়েছে। তবে উত্তর কোরিয়ার কাছে এইমুহূর্তে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় সাবমেরিন রয়েছে। সেটা হল ৭৮।

ভারতের জন্যে এই সাবমেরিন এত গুরুত্বপূর্ণ কেন

জলের তলায় আক্রমণ আরও বাড়ানোর জন্যে আইএনএস কলভারীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। এই সাবমেরিন তৈরি করতে ফ্রান্সের যে সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেধেছে ভারত তার জন্যে খরচ হয়েছে ৩.৫ বিলিয়ন। এই সাবমেরিন তৈরি শুরু হয় ২০০৯ সালের মে মাসে। এই বছর দুটি সাবমেরিনের অন্তর্ভূক্তির কথা ছিল নৌ বাহিনীতে, কিন্তু আপাতত সেই প্রক্রিয়া সময়ের থেকে একটু পিছনে চলছে।

এই সাবমেরিনের বিশেষত্ব কী দেখে নেব একনজরে

  • এই স্করপিন সাবমেরিনের রয়েছে সবচেয়ে উৎকৃষ্টমানের স্টেল্থ এবং স্বল্প অস্ত্র দিয়েই আক্রমণের ক্ষমতা রাখে এই সাবমেরিন।

  • টর্পেডোজের সাহায্যে আক্রমণ করা যাবে এবং জলের ওপর ও নীচ দুজায়গা থেকেই সমান ভাবে সেই আক্রমণ চালানো যাবে।

  • ২০১৬ সালের মে মাসে প্রথম ট্রায়াল হিসেবে এই সাবমেরিন চালানো হয়েছিল, দেখা হয়েছিল সঠিকভাবে ভাসছে কিনা এই সাবমেরিন

  • সমস্ত যুদ্ধক্ষেত্রেই আক্রমণ চালাতে সক্ষম এই সাবমেরিন

  • দ্বিতীয় স্করপিন সাবমেরিন আইএনএস খান্ডেরি এখন পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হচ্ছে। নৌ বাহিনীতে খুব শীঘ্রই এর অন্তর্ভূক্তি ঘটবে।

  •  আইএনএস কলভারীর দৈর্ঘ্য ৬৭.৫ মিটার, উচ্চতা ১২.৩ মিটার। এি বোটের ৩৬০টি ব্যাটারি সেল রয়েছে, প্রতিটির ওজন ৭৫০ কেজি। এই ব্যাটারির ক্ষমতা রয়েছে এক্সট্রিমলি সাইলেন্ট ম্যাগনেটাইস্ড প্রপালশান মোটর চালানোর।



আজকের অনুষ্ঠানে মোদী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, নৌ প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লান্বা, ভাইস অ্যাডমিরাল গীরিশ লুথরা, ওয়েস্টার্ন ন্যাভাল কম্যান্ডের ফ্ল্যাগ অফিসার কম্যান্ডিংও উপস্থিত ছিলেন আজকের অনুষ্ঠানে।