নয়াদিল্লি: করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। প্রধানমন্ত্রীর এই ভার্চুয়াল বৈঠকে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে টিকাকরণ অভিযানের বিস্তারিত নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ভারতে দুটি করোনা ভ্যাকসিন ছাড়পত্র পেয়েছে। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,  ‘করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একসঙ্গে লড়ছে কেন্দ্র-রাজ্য।বিশ্বের অন্য দেশের চেয়ে ভারতের পরিস্থিতি ভাল। পরিস্থিতি ভাল হলেও, দায়িত্বজ্ঞানহীন হলে হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরবর্তী পর্যায়ে ভারত। তিনি বলেছেন, ‘করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভ্যাকসিনের পথে ভারত। ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে করোনার টিকাকরণ শুরু হবে। যে ২টি ভ্যাকসিনে অনুমতি, দু’টিই মেড ইন ইন্ডিয়া।আরও ভ্যাকসিন এলে ভবিষ্যতে আরও পরিকল্পনা করা যাবে।‘দেশবাসীকে ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে যাবতীয় সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। ভ্যাকসিনে যাবতীয় সতর্কতা নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ভারতীয় ২টি ভ্যাকসিন বিশ্বের অন্য টিকার চেয়ে সস্তা।’
তিনি বলেছেন, ‘প্রথমে স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাইকর্মী, পুলিশকর্মীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।‘প্রথম দফায় ৩ কোটি ডোজের খরচ কেন্দ্রের। এক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকে খরচ বহন করতে হবে।’


প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘টিকাকরণের তথ্য সঠিক সময়ে আপলোড করতে হবে। ভারত যা করছে, অনেক দেশ তা অনুসরণ করবে।
বিশ্বের ৫০টি টিকাকরণ শুরু হলেও, পেয়েছেন আড়াই কোটি। ভারতে কয়েক মাসের মধ্যে ৩০ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন।
বিপুল জনসংখ্যার কথা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ'।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ভ্যাকসিনের গুজবে যাতে না ছড়ায় পদক্ষেপ নিতে হবে। অনেকেই ভারতের অভিযানে বাধা তৈরির চেষ্টা করতে পারে।
গুজব ছড়ানো বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে সমস্ত রাজ্যকে। করোনার সঙ্গে অন্য ভ্যাকসিনের কাজও চলবে। দেশের ৯ রাজ্যে বার্ড ফ্লুর সঙ্গে লড়াইয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বার্ড ফ্লু নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে কড়া নজর রাখতে হবে।বার্ড ফ্লু নিয়েও যেন কোথাও গুজব না ছড়ায়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,   সমস্ত রাজ্যের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক হয়েছে, টিকাকরণে কাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।যাঁরা দেশবাসীর স্বাস্থ্য পরিষেবা দিচ্ছেন, তাঁদের প্রথমে টিকা দেওয়া হবে, সাফাই কর্মী, সৈনিক, পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স - তাঁদের প্রথম দফায় টিকা দেওয়া হবে, ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে এবং ৫০ বছরের কম বয়সী অথচ সংক্রমণের আশঙ্কা প্রবল, দ্বিতীয় পর্যায়ে  তাঁদের টিকা দেওয়া হবে।

এদিন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, প্রথম পর্যায়ে ৩ কোটি ভ্যাকসিনের খরচ দেবে কেন্দ্রই।

বাকি ভারতবাসীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে কী হবে? তাঁরা কি বিনামূল্যে করোনার ভ্যাকসিন পাবেন?
তা অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট হয়নি। সোমবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী,দেশে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ৫১ হাজার ১৬০ জনের।
এই প্রেক্ষাপটে ১৩৮ কোটির দেশে করোনার টিকাকরণ কীভাবে হবে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতে আমাদের আগামী কয়েকমাসে ৩০ কোটি মানুষের টিকাকরণের চ্যালেঞ্জ, গত কয়েক সপ্তাহে প্রচুর পদক্ষেপ করা হয়েছে, ইউআইপি- এর পুরোনো মেকানিজম আছে, করোনা টিকাকরণের জন্য সেটা আরও মজুবত করা হয়েছে, টিকাকরণ প্রক্রিয়া চলাকালীন কোভিডের প্রোটোকল মানতে হবে।
সূত্রের খবর, এদিন মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বার্তা দেন,রাজনৈতিক নেতারা যেন অগ্রাধিকারের নিয়ম অগ্রাহ্য করে আগে টিকা না নিতে যান।