আইজল/শিলঙ: মিজোরাম ও মেঘালয় সফরে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ তিনি উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করলেন।


৬০ মেগাওয়াট টিউরিয়াল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন হওয়ার ফলে সিকিম ও ত্রিপুরার পর উত্তর-পূর্ব ভারতের তৃতীয় রাজ্য হিসেবে মিজোরামে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত হল। এই প্রকল্পে বছরে ২৫১ মিলিয়ন ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ১৯৯৮ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৯ বছর পরে আজ সেটার উদ্বোধন হল। মিজোরামে এই প্রথম কোনও কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হল।

এই প্রকল্পের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধের সাহায্যে প্রত্যন্ত গ্রামগুলির সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা, মাছ চাষ, পরিবেশ-বান্ধব পর্যটন উন্নত করা যাবে এবং একইসঙ্গে এই অঞ্চলের জলের সমস্যাও মিটবে।

পশ্চিম মেঘালয়ের তুরা থেকে রাজধানী শিলঙ পর্যন্ত দু-লেনবিশিষ্ট ২৭১ কিমি রাস্তারও উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাস্তাঘাটের উন্নতির জন্য ৯০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি।

মিজোরামের রাজধানী আইজলে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির সুফল হিসেবে মিজোরাম শীঘ্রই কম্বোডিয়া, মায়ানমার, ভিয়েতনামের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে। কালাদান মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রোজেক্টের মাধ্যমে আইজলের সঙ্গে মায়ানমারের সিটবি বন্দরকে যুক্ত করা হচ্ছে। এর ফলে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি উপকৃত হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করেছে কেন্দ্র। গত তিন বছরে ৩,৮০০ কিমি জাতীয় সড়কের জন্য ৩২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ১,২০০ কিমি রাস্তা তৈরি হয়ে গিয়েছে। বাঁশকে গাছের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ফলে উত্তর-পূর্ব ভারতের কৃষকদের উপকার হবে।

শিলংয়ে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মেঘালয়ের গ্রামগুলির সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা এবং ১০০টি জনবসিতর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য গত সাড়ে তিন বছরে কেন্দ্রীয় সরকার প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় ৪৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ইউপিএ সরকারের আমলে ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল, তার চেয়ে তিন গুণ বেশি অর্থ দেওয়া হয়েছে এনডিএ আমলে। শিলঙ বিমানবন্দর সম্প্রসারণের ফলে শীঘ্রই এখানে বোয়িং ৭৩৭ ও এয়ারবাস ৩২০ বিমান নামবে।