মুম্বই: পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ঘাড়েই যাবতীয় ‘দোষ’ চাপালেন দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারির কিংপিন নীরব মোদী। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে লেখা এক চিঠিতে নীবর দাবি করেছেন, তাদের অত্যুৎসাহের ফলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।


গত ১৫-১৬ তারিখে পিএনবি-কে একটি চিঠি লেখেন নীরব মোদী। সেখানে তিনি দাবি করেন, তাঁর থেকে ব্যাঙ্কের পাওনা ৫ হাজার কোটি টাকারও কম। তিনি বলেন, অর্থের ভুল পরিমাণ ঘোষণা করার জন্য সংবাদমাধ্যমে হইচই পড়ে যায়। মোদী বলেন, আপনারা নিজেরাও জানেন, এই পরিসংখ্যান সঠিক নয়। ব্যাঙ্কের কাছে আমার দেনা অনেকটাই কম।


নীবর মোদীর আরও দাবি, খবর প্রকাশিত হতেই তাঁর সংস্থায় হানা-তল্লাশি চালিয়ে বাজেয়াপ্ত শুরু করে বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা। ফলত, এতে তাঁর পক্ষে ব্যাঙ্কের ঋণ পরিশোধ করার রাস্তাই বন্ধ হয়েছে। ঋণ পরিশোধ না করার জন্য চিঠিতে তিনি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের ঘাড়ে যাবতীয় দোষ চাপিয়ে দেন। কার্যত হুমকির সুরেই বলেন, আপনারা নিজেরাই টাকা ফেরতের পথ বন্ধ করেছেন।


এখানেই থেমে থাকেননি নীবর মোদী। তাঁর আরও অভিযোগ, ব্যাঙ্কের জন্যই তাঁর ও তাঁর ব্র্যান্ডের ভাবমূর্তি ও ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, এই ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পরই ফায়ারস্টার ইন্টারন্যাশনাল ও ফায়ারস্টার ডায়মন্ড ইন্টারন্যাশনালের ব্যবসা মার খেয়েছে। তিনি আরও বলেন, নিজেদের ঋণ ফেরত পাওয়ার জন্য আপনারা এতটাই উদগ্রীব হয়ে উঠলেন যে, আমার ব্র্যান্ডটাই ধ্বংস করলেন। এখন আমার পক্ষে আর ঋণ শোধ করার কোনও উপায় নেই।


গত ১৪ তারিখ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক পিএনবি ঘোষণা করে যে তাদের ব্র্যাডি হাউস শাখা থেকে ১১,৪০০ কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে। তারা জানায়, এই প্রতারণা করেছে নীবর মোদী ও তাঁর মামা মেহুল চোকসির সংস্থা। এই প্রসঙ্গে চিঠিতে নীরব বলেছেন, ঘোষণার পরও আমি সততার সঙ্গে আপনাদের অনুরোধ করেছিলাম, আমাকে সময় দেওয়া হোক যাতে তিনটি সংস্থা বেচে দিয়ে আমি ঋণ পরিশোধ করতে পারি।


নীরবের দাবি, ব্যাঙ্ক সেই কথা মানেনি। তিনি যোগ করেন, এখন তাঁর সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ফলে, তাঁর কিছুই করণীয় নেই। তাঁর আরও অভিযোগ, এই ঋণের ক্ষেত্রে, তাঁর ভাই, স্ত্রী ও মামার কোনও ভূমিকাই ছিল না। তা সত্ত্বেও তাঁদের নামে অভিযোগ দায়ের করা হল।


এদিকে, মেহুল চোকসির সংস্থা গীতাঞ্জলি গ্রুপকে কয়েকদিনের মধ্যে ১,০৪৬ কোটি টাকা ফেরত দিতে দাবি জানিয়েছে পিএনবি। এর মধ্যে রয়েছে-- গীতাঞ্জলি জেমস থেকে ৬৪৫ কোটি, গিলি ইন্ডিয়া থেকে ১৮৭ কোটি, নক্ষত্র ব্র্যান্ড থেকে ১১০ কোটি এবং আসমি জুয়েলারি থেকে ১০৩ কোটি টাকা ফেরত চাওয়া হয়েছে।