নয়াদিল্লি: কোনও নেতা- মন্ত্রী নন। নিতান্তই দশটা পাঁচটা ডিউটি করা সাধারণ মানুষ। মুসলিম জঙ্গিদের হিটলিস্টে এবার উঠে এসেছেন তাঁরাই। আইএস পন্থী ইউনাইটেড সাইবার ক্যালিফেট তাদের নিজস্ব চ্যানেলে প্রকাশ করেছে গোটা বিশ্বের ৪,০০০-এর বেশি মানুষের খতম তালিকা। আর এঁদের মধ্যেই আছেন আমার আপনার মত ২৮৫জন ভারতীয়। এঁদের ব্যক্তিগত নানা তথ্য প্রকাশিত হয়েছে ওই চ্যানেলে। তাতে বলা হয়েছে, জিহাদি ভাবধারায় বিশ্বাসী যে কোনও মুসলিম এঁদের যেখানে খুঁজে পাবেন, সেখানেই হত্যা করুন। হ্যাশট্যাগ দেওয়া হয়েছে #ভেরি ইমপর্ট্যান্ট কিল লিস্ট ও #কিল দেম ইমিডিয়েটলি।

এক্সেল শিটে প্রকাশিত এই খতম তালিকায় আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স ও ভারত সহ ১৮টি দেশের ৪,৬৮১ জন নাগরিকের নাম ঠিকানা রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, নানা ওয়েবসাইট থেকে এঁদের তথ্য সহজেই জোগাড় করেছে এই জঙ্গি গোষ্ঠী। তারপর তৈরি হয়েছে সম্ভাব্য শিকারের দীর্ঘ তালিকা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যেভাবে এই তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে, এই গোষ্ঠীর কাজকর্ম আইএস বা আল কায়দার মত উঁচু মানের নয়। কিন্তু আইএসের সঙ্গে এদের যোগসাজস থাকায় বিপদের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

এই গোষ্ঠীর মূল টার্গেট হল, বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সাধারণ মুসলিম নাগরিকদের নিজের মত করে জিহাদে উৎসাহিত করা। এদের বক্তব্য, যারা সিরিয়া বা ইরাকে গিয়ে জিহাদে যোগ দিতে পারেনি, অথচ মুসলিমদের ওপর তথাকথিত ‘অত্যাচারে’-র বদলা নিতে চায়, তারা ব্যক্তিগতভাবে যে কোনও সময় ওই খতম তালিকা থেকে কোনও ‘কাফের’-এর নাম ঠিকানা নিয়ে তাঁকে খুঁজে বার করে হত্যা করতে পারে। অরল্যান্ডো কাণ্ডে একাকী ওমর মতিন যেভাবে ৪৯জনকে নিজের হাতে খুন করেছে, সেভাবেই গোটা বিশ্বের মুসলিমদের অমুসলিমদের হত্যা করার আহ্বান করেছে তারা।

এই প্রথম নয়, গত সপ্তাহেও এই গোষ্ঠী আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার ৮,৩১৮জন নাগরিকের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে তাঁদের খুন করার জন্য স্থানীয় মুসলিমদের উৎসাহিত করেছে। তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, দেখা যাচ্ছে, তাঁরা জানেনই না, কীভাবে আইএসের হিটলিস্টে উঠে গেছেন তাঁরা। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করছেন। এই ফিয়ার সাইকোসিস বা আতঙ্কের আবহ সাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওযার জন্যই জঙ্গিরা এই হিটলিস্ট তৈরি করেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।