নয়াদিল্লি: মহিলারা শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক উন্নতি করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধ বাড়ছে। মহিলাদের প্রতি শ্রদ্ধাও বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এমনই মন্তব্য করলেন সুপ্রিম কোর্টের একমাত্র মহিলা বিচারক আর ভানুমতী। তিনি বলেছেন, মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা শুধু তাঁদের সমস্যা নয়। এটি মানবাধিকারের বিষয়। পুরুষদেরও লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। বিচারপতি ভানুমতীর আশা, ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লির গণধর্ষণের ঘটনা সবার চোখ খুলে দেবে।


জাতীয় ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর পরিসংখ্যানের কথা উল্লেখ করে ভানুমতী বলেছেন, ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যা ৪৩ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। ২০০৫ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে এই ধরনের অপরাধ বেড়েছে ১০৫ শতাংশ। মহিলারা শিক্ষা সহ সমাজের সব ক্ষেত্রে উন্নতি করেছেন। মহিলাদের অধিকারের ধারণাও বদলে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও ২০১৫ সালে ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী, মহিলাদের বিরুদ্ধে ৩,২৭,৩৯৪টি অপরাধের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। ২০১১ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ২,২৮,৬৫০।

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের যে তিন বিচারপতির বেঞ্চ নির্ভয়া গণধর্ষণের মামলার রায় ঘোষণা করেছে, সেই বেঞ্চের সদস্যা ছিলেন ভানুমতী। তিনি বলেছেন, একটি সভ্য সমাজে আইন-শৃঙ্খলা সর্বোচ্চ। নাগরিকরা অলঙ্ঘনীয় মৌলিক মানবাধিকার ভোগ করেন। কিন্তু নির্ভয়ার গণধর্ষণের মতো ঘটনায় সন্দেহ হয়, আমরা কি সত্যিই সভ্য সমাজে বাস করছি? যখনই কারও মর্যাদাহানি হয়, নিরাপত্তাহীনতা এবং অসহায়তার ভাবনা গোটা সমাজকে গ্রাস করে। বিশেষ করে মহিলারা ভয় পেয়ে যায়। তাই সমাজে লিঙ্গসমতা থাকা জরুরি। ছোট থেকেই শিশুদের শেখাতে হবে, যেভাবে পুরুষদের সম্মান করতে হয়, সেভাবেই মহিলাদের প্রতিও সম্মান থাকা দরকার। স্কুলে লিঙ্গসমতার পাঠ দেওয়া আবশ্যিক করতে হবে। এ বিষয়ে বাবা-মা এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।