মুম্বই: আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে মহম্মদ আলি জিন্নাহর ছবি ঘিরে বিতর্কের মধ্যেই ট্যুইট করে জাভেদ আখতার জানালেন, জিন্না ওখানকার ছাত্র, শিক্ষক কিছুই ছিলেন না। এটা লজ্জার যে ওনার ছবি ওখানে রয়েছে। ওখানকার প্রশাসন, পড়ুয়াদেরই নিজে থেকে সেটি সরিয়ে দেওয়া উচিত। তবে যারা ওই ছবি রাখার বিরোধিতা করছে, তাদের গডসের স্মৃতিতে তৈরি মন্দিরেও আপত্তি করা উচিত।
নামী গীতিকার, স্ক্রিপ্ট লেখক যখন এ কথা বলছেন, সে সময় আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জিন্নার ছবি ঘিরে। আলিগড়ের বিজেপি সাংসদ সতীশ গৌতম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তরে জিন্নার ছবি কেন, জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন উপাচার্যকে। ছাত্র সংসদের মুখপাত্র সাফি কিদোয়াই অবশ্য জিন্নার ছবি রাখার সমর্থনে বলেছেন, তিনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, তাই তাঁকে ইউনিয়নের আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হয়েছিল। প্রথামাফিক দপ্তরের দেওয়ালে সব আজীবন সদস্যের ছবি টাঙানো থাকে।
পরিস্থিতি ঘোরালো হয় গতকাল। সেখানকার পড়ুয়াদের অভিযোগ, হিন্দু যুব বাহিনীর সদস্যরা ক্যাম্পাসে ঢুকে স্লোগান দিয়েছে। তারা বলে, সরাতে হবে জিন্নার ছবি। তাদের গ্রেফতারের দাবি করে তারা। সংঘর্ষ হয় দুপক্ষের। পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। অন্তত ৬ জন জখম হয়। হিন্দু যুব বাহিনীর লোকজনকে কিছুক্ষণ থানায় আটকে রেখে পরে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের।
আজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থমথমে আবহাওয়া রয়েছে। ছাত্র ইউনিয়নের দাবি, গতকাল সংঘর্ষস্থলের মাত্র ১০০ মিটারের মধ্যেই অতিথিশালায় ছিলেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি। তিনিই ছিলেন ওদের 'আগাম প্ল্যানমাফিক', 'স্বতঃপ্রনোদিত' হামলার টার্গেট। আমাদের প্রতিবাদ চলবে যতক্ষণ পর্যন্ত আনসারিকে টার্গেট করে চালানো গন্ডগোলের মাথাদের বিরুদ্ধ পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। রাজ্য সরকার ন্যায়বিচারের সব দরজা বন্ধ করে দিলে সব ধর্মনিরপেক্ষ সংগঠনের সহযোগিতা নিয়ে তাঁরা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে যাবেন বলে জানিয়েছেন ছাত্র সংসদের সভাপতি মাসকুর আহমেদ উসমানি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনও প্রস্তাব পাশ করে অভিযোগ করেছে, গতকাল হিন্দু যুব বাহিনীই অপরাধের চক্রান্তমাফিক হামলা করে। কিন্তু পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টে পড়ুয়াদের সঙ্গেই নৃশংস আচরণ করে।