নয়াদিল্লি: ভোটমুখী গুজরাতের প্রচারে সোমনাথ মন্দিরে পা দিয়ে বিতর্কে রাহুল গাঁধী। সেখানে নাকি দর্শনার্থীদের জন্য নির্ধারিত ভিজিটর্স বুকে নিজেকে অ-হিন্দু বলে উল্লেখ করেছেন তিনি, যা থেকে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
সূত্রের খবর, গুজরাতের পশ্চিম উপকূলের সৌরাষ্ট্রের ভেরাবলের কাছে প্রভাস পাটান এলাকায় এই প্রসিদ্ধ মন্দির দর্শনে গিয়ে কংগ্রেস সহ সভাপতি অ-হিন্দু ভক্তদের জন্য রাখা রেজিস্টারে সই করেন, যদিও নিজের নাম লেখেন ভিজিটর্স বুকে। খবর ছড়াতেই ভোট প্রচারে বিবদমান দুই শিবিরের আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা গুজরাতে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। কেন তিনি নিজেকে অ-হিন্দু বলেছেন, প্রশ্ন সেটাই। যদিও কংগ্রেস রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে তড়িঘড়ি সাফাই দিয়েছে, যে ব্যক্তি রেজিস্টার পূরণ করেছেন, তিনি নিয়ম সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল নন। তিনি রাহুলের নাম রেজিস্টারে লেখেন। রাহুলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে অহেতুক হইচই করা হচ্ছে। সোমনাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ রাহুল অ-হিন্দু ভিজিটর্স রেজিস্টারেই সই করেছেন বলে জানিয়েছে। খবর ছড়াতেই তিন স্থানীয় কংগ্রেস নেতা মন্দিরে যান ঠিক কী লেখা হয়েছে রেজিস্টারে, তা পরীক্ষা করে দেখতে।


রাহুলের সঙ্গে ছিলেন সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক পরামর্শদাতা আহমেদ পটেল। রাহুল ও পটেলের নাম সমেত অ-হিন্দুদের রেজিস্টারের সেই পৃষ্ঠার একটি ফটোকপি সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। মনোজ ত্যাগী নামে এক মিডিয়া কোঅর্ডিনেটর ওই রেজিস্টার পূরণ করেছেন। তবে সেখানে রাহুলের নামের পাশে তাঁর সই নেই। সোমনাথ মন্দিরে অ-হিন্দুরা ঢোকার অনুমতি পান, তবে তাঁদের আগে সেখানকার কার্যালয়ে নাম রেজিস্ট্রি করাতে হয়।

কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার দাবি, ওই নথি জাল। ত্যাগীকে দিয়ে জোর করিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়ে পরে তাতে রাহুল ও অন্যদের নাম ঢোকানো হয়েছে। এটা বিজেপির চক্রান্ত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্দিরের ট্রাস্টের একজন। সুরজেওয়ালা এও বলেন, রাহুল ভিজিটর্স রেজিস্টারে সই করেছেন, সেখানে লিখেছেন, জায়গাটি 'অনুপ্রেরণাদায়ক'। সাম্প্রতিক গুজরাত সফরে রাহুল নিজেকে ভগবান শিবের ভক্ত বলেছিলেনস তাও জানান সুরজেওয়ালা।

গুজরাতে ভোট প্রচারে গিয়ে এর আগেও বেশ কয়েকটি মন্দির দর্শন করায় তাঁকে রাহুলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। তিনি নরম হিন্দুত্বে সুড়সুড়ি দিচ্ছেন বলে তারা অভিযোগ করে। পাল্টা কংগ্রেস দাবি করে, বিজেপি, আরএসএসের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির জবাব দিতেই মন্দিরে মন্দিরে যাচ্ছেন দলীয় সহ সভাপতি। কিন্তু এদিন প্রশ্ন উঠল, রাহুল কি সচেতন ভাবে নিজেকে অ-হিন্দু ঘোষণা করলেন? অতীতে দক্ষিণপন্থী নেতারা বারবার রাহুলকে অস্বস্তিতে ফেলতে জানতে চেয়েছেন, তিনি কোন ধর্মমতে বিশ্বাস করেন? বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী সম্প্রতি বলেন, উনি আগে নিজেকে হিন্দু বলে ঘোষণা করুন। আমার সন্দেহ, উনি খ্রিস্টান, ১০ জনপথের ভিতরে গির্জাও বানিয়ে থাকতে পারেন!