নয়াদিল্লি: টুজি স্পেকট্রাম দুর্নীতির অভিযোগ থেকে রেহাই পাওয়ার আগে পর্যন্ত এ বিষয়ে সেভাবে মুখ খুলতে দেখা যায়নি প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজাকে। বিচার চলাকালীন তিনি এ বিষয়ে একটি বই লিখছিলেন। টুজি স্পেকট্রাম দুর্নীতি থেকে রাজা মুক্তি পাওয়ার এক মাস পরে ‘টুজি সাগা আনফোল্ডস’ নামে এই বইটি প্রকাশিত হয়েছে। সেই বইয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও প্রাক্তন কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (ক্যাগ) বিনোদ রাইকে তীব্র আক্রমণ করেছেন রাজা।


মনমোহনকে আক্রমণ করে প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রীর দাবি, ‘আমার সম্পূর্ণ ন্যায়সঙ্গত কাজের পক্ষে ইউপিএ সরকার এবং বিশেষ করে মনমোহন সিংহের কোনও কথা না বলা দেশের বিবেককে নীরব করে দেওয়ার মতোই ছিল। ২০০৯ সালের ২২ ডিসেম্বর টেলিকম মন্ত্রক ও কয়েকটি টেলিকম অপারেটর সংস্থার দফতরে তল্লাশি চালায় সিবিআই। সেদিনই সন্ধে সাতটায় আমি সাউথ ব্লকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করি। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তৎকালীন প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি টি কে এ নায়ারও সেখানে ছিলেন। আমি যখন প্রধানমন্ত্রীকে সিবিআই তল্লাশির বিষয়ে বলি, তিনি সেটা শুনে অবাক হয়ে যান। প্রধানমন্ত্রী কিছু জানতেন না, এটা বিশ্বাস করা কঠিন।’

বিনোদকে আক্রমণ করে রাজা বলেছেন, ‘নিগূঢ় উদ্দেশ্য থেকেই নিজের দফতরের সঙ্গে আপস করেছিলেন বিনোদ। তিনি সাংবিধানিক দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেননি। তিনি স্পেকট্রাম বণ্টনের ফলে ১.৭৬ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হওয়ার ভুল তথ্য দিয়ে সূত্রধরের কাজ করেছিলেন। সংবাদমাধ্যম ও বিরোধী দলগুলি তাঁর সেই তথ্যকে হাতিয়ার করে হইচই শুরু করে।’

রাজার আরও দাবি, ‘যথেষ্ট পরিমাণে স্পেকট্রাম থাকার কথা জানানোর পর মনমোহনই আমাকে স্পেকট্রাম বণ্টনের বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন। কিন্তু মনমোহনকে তাঁর পরামর্শদাতারা ক্রমাগত ভুল বুঝিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের উপর টেলিকম লবিরও প্রভাব ছিল। সেই লবি নতুন সংস্থাগুলিকে লাইসেন্স দেওয়ার ঘোর বিরোধী ছিল। স্পেকট্রাম বণ্টনের বিষয়ে আমাদের নীতি যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে, ঠিক তখনই প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে একটি চিঠি পাই। সেই চিঠিতে যা লেখা ছিল, তার সঙ্গে টেলিকম লবির বাণিজ্যিক স্বার্থের মিল ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ওই চিঠি লেখা উচিত হয়নি। তিনি কেন ওই চিঠি লিখেছিলেন, সেটা আমার কাছে এখনও ধাঁধা। প্রধানমন্ত্রীর দফতরই ওই চিঠি লিখেছিল কি না, সে বিষয়েও আমার সন্দেহ আছে। আমাকে সাজা দিয়ে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারকে খতম করার জন্য বিচার প্রক্রিয়ার উপর রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়েছিল। বিনোদ রাইয়ের কাঁধে বন্দুক রাখা হয়েছিল।’