মু্ম্বই: ফের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গর্ভনর পদে বসতে ইচ্ছুক নন, সহকর্মীদের লেখা চিঠিতে জানিয়ে দিলেন রঘুরাম রাজন। সেপ্টেম্বরে প্রথম দফার মেয়াদ শেষে তিনি পড়াশোনার জগতে ফিরে যাবেন, এমনই বাসনা তাঁর।


সহকর্মীদের লেখা ৮৮৮ শব্দের চিঠিতে রাজন বলেছেন, তিনি যে এজেন্ডা নিয়ে চলেছেন, তা ভারতীয় অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে উন্নয়নের রাস্তায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করেছে।

৪ সেপ্টেম্বর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গর্ভনর পদে বর্তমান মেয়াদ শেষ হচ্ছে তাঁর। তিনি বলেছেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা, ব্যাঙ্কগুলির হাল ফেরানোর কাজ শেষ হয়ে যায়নি। কিন্তু তিনি অনেক ভাবনাচিন্তা করে, সরকারের সঙ্গে কথা বলে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন। তবে একইসঙ্গে রাজন জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে দেশের সেবা করার যে কোনও দায়িত্ব পেলে তিনি এগিয়ে আসবেন। তাঁর উত্তরাধিকারীর হাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সাফল্যের নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে, এমন আশা প্রকাশ করেছেন রাজন।

প্রসঙ্গত, রাজনকে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের শীর্ষপদ থেকে সরাতে উঠেপড়ে লেগেছেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। সুদের হার নিয়ে রাজনের অবস্থানের জেরে দেশের অর্থনীতির প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পর্যন্ত চিঠি দিয়েছেন তিনি। যেহেতু রাজন আমেরিকার গ্রিন কার্ডধারী, তাই তিনি মানসিকতায় ভারতীয় কিনা, সেই প্রশ্নও তুলেছেন স্বামী। দাবি করেছেন, রাজনকে সরিয়ে দিন প্রধানমন্ত্রী।
শুধু তা-ই নয়, ২০১৩-র সেপ্টেম্বর ইউপিএ জমানায় দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কের হাল ধরা রাজন অসহিষ্ণুতা প্রশ্নে অকপটে নিজের স্পষ্ট মত জানিয়ে বা ভারত ‘অন্ধের দুনিয়ায় এক চোখো রাজা’ বলে মন্তব্য করে শাসক শিবিরের বিরাগভাজন হয়েছেন বলেও ধারনা নানা মহলের।
সেই প্রেক্ষাপটেই আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের এই প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদকে ফের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মাথায় বসানো হবে বা তিনি নিজেই এ ব্যাপারে আগ্রহী কিনা, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আজ রাজন নিজেই যাবতীয়দ জল্পনার অবসান ঘটিয়ে দিলেন।
তিনি বলেছেন, আমি পড়াশোনার লোক। আমি সবসময়ই পরিষ্কার বলেছি যে, ভাবনাচিন্তার জগতেই আমার আসল স্থান। আমার তিন বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নেওয়া ছুটিও শেষ হওয়ার মুখে। সুতরাং আমরা কতদূর অর্জন করতে পেরেছি, সেটা ভেবে দেখার এটা দারুণ সময়।