জয়পুর: কোনও বিরাম নেই যেন। একের পর এক শিশুর মৃত্যু ঘটে চলেছে। রাজস্থানের কোটা শহরের জে কে লোন হাসপাতালের ছবিটা ভয়ানক। পর পর শিশুমৃত্যু। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হল ৯টি নবজাতকের।মারা যাওয়া সদ্যোজাতদের বয়স এক থেকে চার দিন। যেন ফিরে এল গত বছর ডিসেম্বরের ছবিটা। গেল বছরও হাসপাতালে পরপর শিশুমৃত্যু ঘটেছিল। ফের এ বছর। ঘটনার পুনরাবৃত্তি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবার দুর্বল পরিকাঠামোকে আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। বুধবার ৫টি এবং বৃহস্পতিবার ৪টি শিশু মারা গিয়েছে। রাজ্যে তো বটেই গোটা দেশেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, উদ্বেগ দেখা গিয়েছে। অবিলম্বে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রঘু শর্মা।


এদিকে হাসপাতালের গাফিলতির অভিযোগ তুলে দুই মৃত শিশুর আত্মীয়রা বৃহস্পতিবার থেকে ধরনায় বসেছেন। তাঁদের বক্তব্য, হাসপাতালে শিশুগুলিকে কেউ পরীক্ষাই করেন না তারা কেমন আছে। কেউ এগিয়ে আসেনা। না হাসপাতালের কর্মীরা, না চিকিৎসকরা। সম্মিলিত গাফিলতিই শিশুদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে দিনের পর দিন।

উপর থেকে চাপ আসার পর নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। জেলা কমিশনার কেসি মীনা ও জেলার কালেক্টর উজ্জ্বল রাঠোর গতকাল সন্ধ্যায় হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। বৈঠকও করেন। তবে কোনও ধরনের সংক্রমণ কিংবা অস্বাভাবিক কারণে এতগুলি শিশুর মৃত্যু হয়নি বলে জানাচ্ছেন হাসপাতালের সুপার সুরেশ দুলারা। তাঁর কথায় সায় দিয়েছেন কোটা মেডিক্যাল হাসপাতালের অধ্যক্ষ-ও। তাঁদের মতে, সব ক’টিই স্বাভাবিক মৃত্যু। তিনটি শিশুকে নাকি মৃত অবস্থাতেই আনা হয়েছিল,  আরও তিনজন জন্মগত ত্রুটির কারণে মারা গিয়েছ, বাকিরা মারা গিয়েছে হঠাৎ করে। তবুও আর এ রকম ঘটনা আটকাতে মরিয়া প্রশাসন।ছ’জন অতিরিক্ত চিকিৎসক ও দশজন নার্সকে শিশুদের দিকে বিশেষ পর্যবেক্ষণের ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিশুমৃত্যুর আর পুনরাবৃত্তি চায় না প্রশাসন।উল্লেখ্য গেল বছর ডিসেম্বরে রাজস্থানের কোটার জে কে লোন হাসপাতালে মারা যায় গেছে মোট ৭৭টি শিশু। এর মধ্যে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় মারা যায় ১০টি শিশু। চলতি ডিসেম্বরেও শিশু মৃত্যুর মিছিল চলছে।