জোধপুর: রাজস্থানে চলতি রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে সার দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় মুখ্যমন্ত্রী অশোক গৈহলৌতের দাদার বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র।
বুধবার সকালে ইডি দেশজুড়ে অভিযান শুরু করে। এরমধ্যে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর দাদা অগ্রসেন গেহলৌতের বাড়ি ও অফিসেও তল্লাশি চালানো হয়।
বিজেপি ২০১৭-তে সার দুর্নীতির অভিযোগে গেহলৌতের দাদার নামও টেনে এনেছিল। ২০০৭-২০০৯ -এর মধ্যে কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার ক্ষমতায় আসীন থাকার সময় গেহলৌতের দাদার বিরুদ্ধে ভর্তুকিপ্রাপ্ত সার রফতানির অভিযোগ করেছিল বিজেপি। তাদের অভিযোগ ছিল, কৃষকদের জন্য বরাদ্দ ভর্তুকিযুক্ত দামের সার বিদেশে রফতানি করা হয়েছিল।

কাস্টমস এই অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছিল। কাস্টমসের চার্জশিটের ভিত্তিতে ইডি আর্থিক তছরুপের মামলা দায়ের করেছিল তিনটি সংস্থা ও তাদের মালিকদের বিরুদ্ধে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অগ্রসেনও। পরে তাঁকে ৬০ কোটি টাকা জরিমানা দিতে বলা হয়েছিল।

তাঁর আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে সিবিআই,ইডি ও আয়কর বিভাগের তত্পরতা প্রসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে গেহলৌত বলেন, রাজস্থানে তাঁর সরকার ফেলার ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি।
আয়কর বিভাগ গত সপ্তাহে কর ফাঁকি মামলায় জয়পুরে রাজস্থানের হাইড্রোপাওয়ার ইনফ্রাস্ট্রাকচার কোম্পানি ও কয়েকটি সম্পর্কিত ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তল্লাশি চালিয়েছিল।
উল্লেখ্য, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সদ্য অপসারিত উপমুখ্যমন্ত্রী সচিন পায়লটের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের মধ্যেই আয়কর বিভাগ ওই তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল।
রাজস্থানের সরকারের চিফ হুইচ মহেশ জোশী দুই কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কিত চত্বরে আয়কর বিভাগের তল্লাশির নিন্দা করেছিলেন।

এরইমধ্যে রাজস্থান পুলিশের এসএইচও-র আত্মহত্যার ঘটনার তদন্ত মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। সিবিআই এসএইচও বিষ্ণু দত্ত বিষ্ণোইয়ের আত্মহত্যার মামলায় কাল অশোক গেহলৌতের ওএসডি দেরারাম সেইনিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআই জয়পুরে তলব করেছিল।
এরইমধ্যে রাজস্থান বিধানসভার অধ্যক্ষ সিপি জোশী রাজস্থান হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। হাইকোর্ট গতকালই পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অধ্যক্ষকে কংগ্রেসের ১৯ বিদ্রোহী বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ না করতে বলেছিল।
সুপ্রিম কোর্টে দায়ের পিটিশনে জোশী দাবি করেছেন, শো-কজ নোটিশ পাঠানোর পূর্ণ এক্তিয়ার অধ্যক্ষর রয়েছে।
বিদ্রোহী সচিন এবং তাঁর অনুগামীদের বিধায়ক পদ কেন খারিজ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিস দিয়েছিলেন অধ্যক্ষ। হাইকোর্টে সেই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন সচিনরা। শুক্রবার সেই মামলার রায় ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছে আদালত। তবে তত দিন পর্যন্ত সচিন ও বিদ্রোহী বিধায়কদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিপি জোশী।