যোধপুর: রাজস্থানের রাজসমন্দে বাঙালি শ্রমিককে নারকীয় খুনের ঘটনার ভিডিও দেখে  শিউরে উঠেছিল সারা দেশ। এই ঘটনায় যাকে খুন করতে দেখা গিয়েছিল সেই শম্ভুলাল রেগর এখন যোধপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি। এবার জেল থেকেই শম্ভুনাথের আরও ভিডিও প্রকাশ্যে এল। যদিও ওই ভিডিওগুলির যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায় নি।তবে ভিডিওগুলি দেখে মনে হচ্ছে, সেগুলি যোধপুর সেন্ট্রাল জেলের ভেতরেই তোলা হয়েছে। ভিডিওতে জ্বালাময়ী বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রেখেছে শম্ভুলাল। এই ঘটনায় জেলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত গাফিলতির বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে।  জেলের ভেতরে কীভাবে এক বন্দির ভিডিও তোলা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।


গত বছর শম্ভুলাল মালদার বাসিন্দা এক শ্রমিককে পিটিয়ে, কুপিয়ে এবং গায়ে আগুন দিয়ে খুন করেছিল। পুরো ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করেছিল শম্ভুলালেরই ১৫ বছরের কিশোর ভাইপো।

এবার দুটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে, তা দেখে মনে করা হচ্ছে, সেগুলি জেলের সেলেই তোলা হয়েছে। মাথা ঢেকে রেখে শম্ভুলালকে সেলফোনে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে। সেইসঙ্গে তার দীর্ঘ-বিদ্বেষভরা বক্তব্যও শোনা গিয়েছে। একজন মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যার পরও তার কোনও অনুতাপ নেই বলে জানিয়েছে শম্ভুলাল।  তার সাফাই, কোনও হিন্দু মেয়ের কোনও বিপদ সে দেখতে পারে না। এজন্য তার জীবন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্ত এরজন্য তার কোনও অনুশোচনা নেই।

একটি মেয়ের সঙ্গে  অবৈধ সম্পর্কের কারণেই ভিন রাজ্যের শ্রমিককে সে হত্যা করেছে বলে যে 'প্রচার' করা হচ্ছে, তাতে সে দুঃখ পেয়েছে বলে দাবি করেছে শম্ভুলাল।

হিন্দুদের এক হওয়ার কথাও বলেছে নারকীয় খুনের দায়ে অভিযুক্ত।

অন্য একটি ভিডিওতে তার জীবনের বিপদের কথাও বলেছ শম্ভুলাল।

ভিডিও দুটি প্রকাশ্যে আসার পর শম্ভুলাল কীভাবে জেলের ভেতর সেলফোন পেল তা জানতে রাজস্থানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুলাবচাঁদ কাটেরিয়া তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের করেছে। জেলের আধিকারিকরা মোবাইল ফোনের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন। তবে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, জেলে কোনও মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

শম্ভুলাল পুলিশকে জানিয়েছে, ওই ফোনটি তার নয়। তবে ফোনটি কার, সে বিষয়েও কিছু জানায়নি সে।

সূত্রের খবর, ওই জেলে শুধুমাত্র ২ জি জ্যামার লাগানো রয়েছে। এই জেলেই রয়েছে ধর্ষণে অভিযুক্ত স্বঘোষিত ধর্মগুরু আশারাম বাপুও।

শম্ভুলাল জানিয়েছে, এটাই তার শেষ ভিডিও। সে বলেছে, তাকে জেলের সবচেয়ে সুরক্ষিত সেলে রাখা হলেও পশ্চিমবঙ্গের এক সাজাপ্রাপ্ত তাকে খুনের ছক কষছে বলে সে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

উল্লেখ্য, মালদার বাসিন্দা ৪৫ বছরের মহম্মদ আফরাজুলকে খুনের যে হাড়হিম করা ভিডিও প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে শম্ভুলালকে 'লাভ জিহাদে'র বিরুদ্ধে বলতে শোনা গিয়েছিল। উল্লেখ্য, ওই শব্দটি দক্ষিণ পন্থী গোষ্ঠীগুলি ব্যবহার করে।