কিছুদিন ধরে তাঁর স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো ছিল না। গত শুক্রবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে কোটা থেকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে। কিন্তু দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন বাবা বজরং দাস।
শনিবার বুন্দিতে তাঁর দেহ নিয়ে মিছিলে হাঁটল অসংখ্য অনুরাগী। এরপর নরসিংহ আশ্রমে শেষকৃত্য সম্পন্ন হল বাবা বজরং দাসের। হাজির ছিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক হরিমোহন শর্মা ও জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা।
বিহারের দশরথ মাঁঝি গয়ার গাহলৌর পাহাড়ের মধ্য দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন রাস্তা। স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসাই ছিল তাঁর এই কাজের অনুপ্রেরণা। আর বাবা বজরং দাস গ্রামবাসীদের সুবিধার কথা ভেবেই ১৯৮০-র দশকে বুন্দির মান্দপুর পাহাড়ের বুক চিরে রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেন। এই কাজে তাঁর সম্বল ছিল হাতুড়ি আর বাটালি। কিছুদিন পর এই উদ্যোগে সামিল হন তাঁর শিষ্য ও স্থানীয় গ্রামবাসীরাও।
শুধু গেন্ডোলি ও মান্দপুরই নয়, আশেপাশের আরও প্রায় ১০-১২ গ্রামের বাসিন্দারা বাবা বজরং দাসের এই উদ্যোগে উপকৃত হয়েছেন। দীর্ঘ ১৫ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে ১৯৯৫-এ ৩০০ মিটার লম্বা, ২০ ফুট চওড়া এবং ২৫ ফুট গভীর রাস্তাটি তৈরি হয়।
বাবা বজরং দায়ের শিষ্য তথা স্থানীয় এক গ্রামবাসী বলেছেন, দুই দশক কেটে গেলেও রাস্তাটি এখনও কাঁচা। বনবিভাগের জমিতে নির্মিত ওই রাস্তা দিয়ে বড় গাড়ি হয়ত চলে না। কিন্তু মোটর বাইক, সাইকেল চলাচল করে। পায়ে হেঁটেও পার হন পথচারীরা। স্থানীয়দের কাছে পথটি বজরং ঘাঁটি বলেই পরিচিত।
রাস্তা গড়ে তোলার কারিগর বেশিরভাগ সময় লাল রঙের ধূতি পরে থাকতেন বাবা বজরং দাস।
স্থানীয়রা বলছেন, বাবা বজরং দাসের মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তা পূর্ণ হওয়ার নয়। শুধু রাস্তা তৈরিই তো নয়, বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গেও জড়িয়ে ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পর স্থানীয়রা বলছেন, তিনি যে রাস্তাটি তৈরি করেছেন, তা যদি সরকার পাকা করার বন্দোবস্ত করে তাহলে তাঁকে উপযুক্ত শ্রদ্ধা জানানো হবে।