শ্রীনগর: নতুন হিংসায় একজনের প্রাণ যাওয়ার মধ্যেই অশান্ত কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে ফের রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে বুধবার বৈঠক করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

দ্বিতীয় দফার কাশ্মীর সফরে আজ শ্রীনগরে নেহরু গেস্ট হাউসে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলি কেন্দ্রকে অনুরোধ করে উপত্যাকায় দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ফিরিয়ে আনতে যত দ্রুত সম্ভব আলোচনার পথকে প্রশস্ত করতে।

কাশ্মীরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে এদিন রাজধানীতে রাজনাথ জানান, সব পক্ষের সঙ্গেই আলোচনায় রাজি তারা। তিনি যোগ করেন, যারা ‘কাশ্মীরিয়ত’, ‘ইনসানিয়ত’ এবং ‘জামহুরিয়ত’ তত্ত্বে বিশ্বাসী, তারা সকলেই স্বাগত।

প্রসঙ্গত এদিনই পুলওয়ামা জেলার পোহু গ্রামে নতুন করে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদী ও নিরাপত্তাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে একজন যুবকের প্রাণ গিয়েছে। এই নিয়ে গত ৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া অশান্ত কাশ্মীরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬৬। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন তিন অফিসার সমেত ১৮ জন নিরাপত্তাকর্মী।

এদিন কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দুদিনের সফরে রাজনাথ জম্মু ও কাশ্মীরে পৌঁছন। তাঁর সঙ্গে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব মেহঋষি সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। নেহরু গেস্ট হাউসে পৌঁছে প্রথমেই তিনি এক দফা প্রশাসনিক বৈঠক সেরে নেন।

জানা গিয়েছে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কাশ্মীরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধা-সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পদাধিকারী থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য, অত্যাবশ্যক সামগ্রী দফতরের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে গিয়ে বাহিনীকে যথাসম্ভব সংযত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

এদিন পিডিপি সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সরতাজ মদনির নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল রাজনাথের সঙ্গে দেখা করে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করেন। পাশাপাশি, জম্মু ও কাশ্মীর প্রদেশ সভাপতি জি এ মিরের নেতৃত্বে দেখা করে কংগ্রেস প্রতিনিধিদল। আগামীকাল, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি, রাজ্যপাল এন এন ভোরার সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজনাথ।

গত সপ্তাহেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার নেতৃত্বাধীন বিরোধী শিবিরের এক প্রতিনিধিদল দিল্লি গিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে।

গত ৮ জুলাই হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই অশান্ত হয়ে উঠেছে উপত্যকা। ৪৭ দিন পেরিয়ে গেলেও, এখনও অশান্তি থামার কোনও লক্ষণই নেই। এখনও বহু জায়গায় কারফিউ জারি রয়েছে।