নয়াদিল্লি: জাতীয় রাজনীতিতে শোরগোল তুলে বিজেপির যুব নেতা শিবম শঙ্কর সিংহ দল থেকে ইস্তফা দিলেন। নিজের ব্লগে দল ছাড়ার একাধিক কারণ দেখিয়েছেন তিনি। তাঁ অভিযোগ, ইডি, সিবিআইয়ের অন্যায় ব্যবহার করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেউ বিজেপির দিকে আঙুল তুললেই তাঁকে দেশবিরোধী ও হিন্দু বিরোধী তকমা দেওয়া হচ্ছে।


মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র শিবম শঙ্কর ডেটা অ্যানালিটিক্স নিয়ে কাজ করেন। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে বিজেপির চোখ ধাঁধানো ফলে তাঁর বড় ভূমিকা রয়েছে। রাম মাধবের দলে সামিল এই যুবক সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির হয়ে প্রচার করতেন। তাঁর ব্লগে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের ভাল মন্দ উভয় দিকই তুলে ধরেছেন শিবম। উজ্জ্বলা যোজনা, স্বচ্ছ ভারত মিশন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার মত প্রকল্পগুলির প্রশংসা করেছেন তিনি। জানিয়েছে, সড়ক তৈরির কাজ আগের থেকে অনেক দ্রুত চলছে, সরকারের ওপরের স্তরে দুর্নীতি কমেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি। কিন্তু নীচু স্তরে আগের মতই রয়েছে দুর্নীতি। উত্তর পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থারও আগের থেকে  অনেক উন্নতি হয়েছে, সর্বত্র পৌঁছে যাচ্ছে প্রথম সারির সংবাদ চ্যানেলগুলো। রাজ্যেগুলিতে আইনশৃঙ্খলারও আগের থেকে উন্নতি হয়েছে।

কিন্তু বিজেপি সরকারের যে খারাপ দিকগুলি শিবম তুলে ধরেছেন সেগুলি কপালে ভাঁজ ফেলতে বাধ্য। যেমন ইলেক্টোরাল বন্ড। এই বন্ডের ব্যাপারে কেউ জানতে পারে না। কিন্তু কোনও কর্পোরেট সংস্থা যদি নির্দিষ্ট কোনও রীতি রূপায়ণের জন্য ১০০০ কোটি টাকার ইলেক্টোরাল বন্ড পার্টিতে দেয়, তাহলে তাদের কাজ হয়ে যাবে। এভাবে দুর্নীতিকে আইনসম্মত করার চেষ্টা চলেছে বলে দাবি করেছেন শিবম। এর ফলে যে কোনও কর্পোরেট বা বিদেশি শক্তি রাজনৈতিক দলগুলিকে কিনে নিতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা।

তাঁর অভিযোগ, সিবিআই ও ইডির অপপ্রয়োগ হচ্ছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে এই দুই প্রতিষ্ঠানকে।

অরুণাচলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কালিখো পুল, বিচারক লোয়া, সাহাবুদ্দিন জাল এনকাউন্টার মামলার বিচার হয়নি। ধর্ষণের মত অভিযোগে অভিযুক্ত বিধায়ককে বাঁচানোর চেষ্টা চলেছে।

নোটবাতিলের পদক্ষেপ পুরোপুরি ব্যর্থ। এতে বেশ কিছু ছোট ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাড়াহুড়ো করে চালু হয়েছে জিএসটি। ব্যবসায়ীদের লোকসান হয়েছে এতে। যদিও তা স্বীকার করতে রাজি নয় বিজেপি।

প্রচার করা হচ্ছে, ২০১৪ সাল থেকে বিদেশে সম্মান পাচ্ছে ভারত। এ কথা পুরোপুরি ভুল। বিদেশে এ দেশের সম্মান অর্থনীতি ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের সাফল্যের সরাসরি পরিণাম। মোদী সরকারের বিদেশ নীতি নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।

ভুয়ো খবরের জোরদার প্রচার চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন শিবম। মাঝে মধ্যেই শোরগোল তোলা হচ্ছে, হিন্দুরা সঙ্কটে পড়েছেন। কিন্তু বাস্তবে এমন কিছু ঘটেনি। এমন অভিযোগ করে বাস্তব সঙ্কট থেকে জনতাকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে।