রোহতক: ছবির পর্দায় বা ভক্তদের মাঝে যেভাবে একাই সব সমস্যার সমাধান করতে পারেন এমন ভাবমূর্তি ছিল গুরমিত রাম রহিম সিংহের, ধর্ষণ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলে যেতেই সেই মেজাজ উধাও। কারাগারে বন্দি হয়ে থাকতে তিনি ভয় পাচ্ছেন। রাতে কাঁদছেন, চিৎকারও করছেন। এমনই জানিয়েছেন রোহতকের সুনারিয়া জেলে রাম রহিমের পাশের সেলে পাঁচ দিন বন্দি থাকা এক দলিত আন্দোলনকারী স্বদেশ কিরড।

২৫ অগাস্ট সুনারিয়া জেলে নিয়ে যাওয়া হয় রাম রহিমকে। ২৮ অগাস্ট তাঁর সাজা ঘোষণা করেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারপতি জগদীপ সিংহ। গত ৯ মাস ধরে সুনারিয়া জেলে বন্দি ছিলেন স্বদেশ। তিনি বুধবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। রাম রহিমের পাশের সেলে থাকা স্বদেশ বলেছেন, ‘সেলের মধ্যে রাম রহিম চিৎকার করে বলতেন, আমার কী দোষ? আমি কী করেছি? রাতে কাঁদতে কাঁদতে বলতেন, তিনি ভয় পাচ্ছেন। জেল কর্তৃপক্ষ যেন তাঁকে আটকে না রাখে।’

ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধান বিলাসবহুল জীবন কাটাতে অভ্যস্ত। জেলেও তিনি সেভাবেই থাকতে চান। স্বদেশের কথা অনুযায়ী, জেলে বোতলবন্দি জল খেতে চাইছিলেন রাম রহিম। জেলে প্রত্যেক বন্দির অ্যাকাউন্ট থাকে। রাম রহিমের অ্যাকাউন্ট খোলা হওয়ার পর ক্যান্টিন থেকে তাঁকে বোতলবন্দি পানীয় জল দেওয়া হয়। জেলের খাবারও খাবেন না রাম রহিম। জেলের নিয়ম মেনে তাঁকে ফল খেতে দেওয়া হচ্ছে।

স্বদেশ আরও বলেছেন, জেলের মধ্যে টি-শার্ট ও কেপরি পরে ছিলেন রাম রহিম। তবে সাজা ঘোষণার দিন জেলের সুপার সুনীল সাঙ্গওয়ান বলেন, তাঁকে আর বাইরের পোশাক পরে থাকতে দেওয়া হবে না। সেদিন থেকেই বিমর্ষ দেখাচ্ছিল রাম রহিমকে। সাজা ঘোষণার পর থেকেই তিনি চুপচাপ ছিলেন। বেশি খাচ্ছিলেনও না।

সুনারিয়া জেলে ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধানকে যেদিন নিয়ে যাওয়া হয়, সেদিন থেকেই কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। অন্য বন্দিদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করা, ফোনে কথা বলা, এমনকী আদালতে জামিনের আবেদনের শুনানির জন্য যাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। ২৪ অগাস্ট স্বদেশের জামিন মঞ্জুর হয়। কিন্তু তিনি ৩০ অগাস্ট মুক্তি পান।