নয়াদিল্লি: সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সময়ের আগেই রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করল বিজেপি। সোমবার, বিহারের বর্তমান রাজ্যপাল রামনাথ কোবিন্দের নাম ঘোষণা করেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সব দলই কোবিন্দকে সমর্থন করবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
বিজেপি সূত্রে খবর, আগামী ২৩ তারিখ নিজের মনোনয়ন পেশ সম্ভবত পেশ করবেন কোবিন্দ। রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর নাম বাছাইয়ের জন্য এদিন বৈঠকে বসেছিল বিজেপি সংসদীয় বোর্ড। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে আলোচনার পর কোবিন্দের নাম চূড়ান্ত করা হয়।
উত্তরপ্রদেশের দলিত নেতা কোবিন্দের দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। গেরুয়া শিবিরের দলিত মোর্চার মুখ ছিলেন কোবিন্দ। ১৯৯৮ থেকে ২০০২ সভাপতি হিসেবে সংগঠনকে নেতৃত্ব দেন।
উত্তরপ্রদেশ থেকে তাঁকে দুবার রাজ্যসভায় মনোনীত করেছিল বিজেপি। ১৯৯৪ থেকে ২০০৬—দীর্ঘ ১২ বছর রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন কোবিন্দ। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্রের দায়িত্বও পালন করেছেন কোবিন্দ। ২০১৫ সালের অগস্টে তাঁকে বিহারের রাজ্যপাল করে নিয়োগ করে বিজেপি।
পেশায় আইনজীবী কোবিন্দ কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক এবং আইন পাশ করেন। ১৯৭৭-১৯৭৯ তিনি দিল্লি হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের কৌঁসুলি ছিলেন। এরপর ১৯৮০ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি সুপ্রিম কোর্টে সরকার কৌঁসুলির দায়িত্ব পালন করেন।
৭২ বছরের কোবিন্দের এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য পরিচিত কোবিন্দ। প্রায়ই সমাজের দুর্বল শ্রেণি, বিশেষকরে তফসিলি জাতি ও উপজাতি মহিলাদের বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ দিতেন কোবিন্দ। যে কারণে, প্রান্তিক মানুষের কাছে তিনি গ্রহণযোগ্য হতে পারেন বলে মনে করছে বিজেপি।
বিহারের রাজ্যপাল ছাড়াও, দীর্ঘ সাংসদ জীবনে একাধিক কমিটিতে থেকেছেন রামনাথ কোবিন্দ। রাজ্যসভার হাউস কমিটির চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে তফশিলি জাতি ও উপজাতি কল্যাণ সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সদস্য এবং সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ণ কমিটির সদস্যও থেকেছেন তিনি।
শুধু তাই নয়। শিক্ষাজগতেও বহু কমিটিতে ছিলেন কোবিন্দ। লখনউয়ের বি আর অম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ ম্যানেজমেন্টে ছিলেন তিনি। পাশাপাশি, কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টের বোর্ড অফ গভর্নর্সে ছিলেন বিজেপির রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী। এছাড়া, ২০০২ সালে, রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় তিনি ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
যদি কোবিন্দ নির্বাচিত হন, তাহলে কে আর নারায়ণনের পর তিনিই হবেন দেশের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি, যিনি দলিত সম্প্রদায় থেকে উঠে আসবেন।