নয়াদিল্লি: পুজোর মুখে খুশির খবর! কিছুটা হালকা হতে পারে বাড়ি-গাড়ির ঋণের মাসিক কিস্তি। কমতে পারে স্বল্প মেয়াদি ঋণে সুদের বোঝাও। কারণ, ফের রেপো রেট কমানোর রাস্তায় হাঁটল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

২৫ বেসিস পয়েন্ট কমে রেপো রেট দাঁড়াল ৬.২৫ শতাংশ। যা গত ৬ বছরে সর্বনিম্ন।

শিল্প মহল এই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্তকে দিপাবলীর উপহার হিসেবেই মনে করছে।

ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবার উর্জিত পটেলের নেতৃত্বে এদিন বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের আর্থিক নীতি নির্ধারক কমিটি। সেখানে রেপো রেট কমানোর পক্ষেই রায় দেন সকলে।

স্বল্পকালীন মেয়াদে বাণিজ্যক ব্যাঙ্কগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে যে সুদের হারে ঋণ পায় তাকে বলে রেপো রেট। রেপো রেট কমায় বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি আগের থেকে কম সুদে স্বল্পমেয়াদী ঋণ নিতে পারবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে।

তার ফলে কী লাভ হবে সাধারণ মানুষের?  আরবিআই থেকে কম সুদে ঋণ পেলে, বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিও সাধারণ ঋণে সুদ কমানোর রাস্তায় হাঁটতে পারে। কিছুটা সস্তা হতে পারে বাড়ি, গাড়ি বা অন্য স্বল্পমেয়াদি ঋণে সুদের হার। হাল্কা হতে পারে সাধারণ মানুষের ওপর ইএমআই-এর বোঝা।

অন্যদিকে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট কমালে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে। কারণ, ঋণ সস্তা হয়ে যাওয়ায় প্রচুর মানুষ তা নিতে পারেন। ফলে বাজারে টাকার যোগান বেড়ে যায়।

কিন্তু এবার বর্ষা ভাল হওয়ায় কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন ভাল হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, তার ফলে চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্য ঠিক থাকবে। ফলে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা নেই।

উল্লেখ্য, উর্জিতের পূর্বসূরী রঘুরাম রাজনের আমলে বারেবারেই রেপো রেট কমানোর দাবি উঠেছিল। তাঁর বিরুদ্ধে একাংশ রেপো রেট চড়া রেখে আর্থিক বৃদ্ধির হারে রাশ টেনে রাখার অভিযোগ তুলেছিলেন। এই অভিযোগকারীদের তালিকায় ছিলেন কয়েকজন বিজেপি নেতাও।

রাজন জমানার অবসানের পরই রেপো রেট একধাক্কায় অনেকটাই কমল। ২০১০-র নভেম্বরে রেপো রেট ছিল ৬.২৫ শতাংশ। ২০১১-র অক্টোবরে ছিল সর্বোচ্চ- ৮.৫ শতাংশ। এরপর ফের ২০১০-র নভেম্বরের স্তরে নামল রেপো রেট।

এদিন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সরকার।  গড় অভ্যন্তরীন উত্পাদন (জিডিপি)-র ৮ শতাংশ বৃদ্ধির লক্ষ্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্ত সহায়ক হবে বলে সরকার জানিয়েছে।

উর্জিত পটেল বলেছেন, মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। আগামী মাসগুলিতে খাদ্যদ্রব্যে মুদ্রাস্ফীতির হার স্থিতিশীল রাখার ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপগুলি সহায়ক হবে।

আরবিআই গভর্নর আশা প্রকাশ করে বলেছেন, রেপো রেট হ্রাস এবং সরকারের ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্তের সুফল ব্যাঙ্কগুলিকে তাদের ঋণগ্রহীতাদের পৌঁছে দিতে উত্সাহিত করবে।