খবরে প্রকাশ, সাঁচী (নাম পরিবর্তিত) নামে ৩২ বছরের এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে সম্প্রতি তাঁরই বাড়ি থেকে উদ্ধার করেন দিল্লি মহিলা কমিশনের সদস্যরা। ওই তরুণীর মুখ থেকে পুরো ঘটনার বিবরণ শুনে তাজ্জব বনে যান কমিশনের সদস্যরা।
ওই মহিলা জানান, ২০০৯ সালের ১৪ অগাস্ট, যখন পুরো দেশ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করার আয়োজনে মেতে উঠেছিল, সেদিন তাঁর জীবনে নেমে আসে বন্দিদশার কালো ছায়া। সাঁচী জানান, তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখেন তাঁরই বাবা-মা। তখন সাঁচীর বয়স ২৫ ছিল।
কিন্তু তিনি কী এমন অপরাধ করেছিলেন? সাঁচী জানান, তাঁর একটাই ‘অপরাধ’ ছিল। তিনি এক সহপাঠী মুসলিম ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সেটাই মেনে নিতে পারেননি তাঁর পরিবারের সদস্যরা। সাঁচী যাতে বাইরে বেরোতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। ইন্টারনেট এবং টেলিফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
সাঁচী জানান, তিনি যাতে পালানোর চেষ্টা না করেন, তার জন্য তাঁর মা ক্রমাগত আত্মহত্যার হুমকি দিতেন। শুধু তাই নয়, ভিনধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম করার জন্য তাঁর বাবা তাঁকে বেদম মারতেন। এমনকী, পরিবারের নাম খারাপ করার অভিযোগে তাঁকে খুনের হুমকিও দিতেন অন্যান্য সদস্যরা, বলেও জানিয়েছেন সাঁচী।
তরুণী জানান, হুমকিতে কাজ না হলে, তাঁকে অন্যভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতেন তাঁর বাবা-মা। তাঁকে ‘লাভ জেহাদ’-এর বিভিন্ন খবর দেখিয়ে বোঝানো হত, ওই ছেলেটি তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
সম্প্রতি, তাঁর মা স্নানে গিয়েছিলেন। বাড়িতে সেই সময়ে অন্য কেউ ছিলেন না। সেই সুযোগে, তরুণী মহিলাদের আপৎকালীন টোল-ফ্রি নম্বর ১৮১-তে ফোন করেন। উল্টোপারে দিল্লি মহিলা কমিশন (ডিসিডব্লিউ)-র এক সদস্যা ফোনটি তোলেন। তাঁকে সাঁচী শুধু বলেন, দয়া করে আমাকে উদ্ধার করুন।
গত ৫ মে সাঁচীকে উদ্ধার করে ডিসিডব্লিউ। কিন্তু, এর মধ্যে কেটে গিয়েছে সাত-সাতটি বছর। মহিলাকে বর্তমানে কমিশনের শিবিরে রাখা হয়েছে। যদিও, তিনি জানিয়েছেন, বাবা-মা’র বিরুদ্ধে তিনি মামলা করবেন না।