নয়াদিল্লি: জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে উপত্যকায় চলতে থাকা অশান্তি এখন মোড় নিয়েছে অন্য খাতে। নিরাপত্তাবাহিনীর দিকে পাথর ছোঁড়ার পাশাপাশি স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর রাগ উগরে দিচ্ছে জঙ্গিরা। এখনও পর্যন্ত পোড়ানো হয়েছে ৩০-এর কাছাকাছি স্কুল। কাশ্মীরের গোটা একটি প্রজন্মকে এভাবে শিক্ষার বাইরে রাখার অপচেষ্টায় উদ্বিগ্ন কেন্দ্র এ ব্যাপারে মেহবুবা মুফতি সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিল। স্কুলগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অশান্তির জেরে বন্ধ থাকা সব স্কুল দ্রুত খোলার জন্য তারা নির্দেশ দিয়েছে।

পাশাপাশি, যে সব স্কুল জঙ্গিরা সহজে টার্গেট করতে পারে সেগুলি রক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে জম্মু কাশ্মীর সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্র জানিয়েছে, একের পর এক স্কুল পোড়ানোর ঘটনায় তারা রীতিমত উদ্বিগ্ন। রাজ্যে দীর্ঘস্থায়ী অশান্তির সবথেকে বড় শিকার ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা সবথেকে বেশি। জুলাইয়ের পর থেকে এতদিন উপত্যকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় চিন্তিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তাঁর বিশ্বাস, স্কুলগুলি খোলা সম্ভব হলে কাশ্মীরের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হওয়ার পথে হাঁটবে।

জঙ্গি ওয়ানির মৃত্যুর জেরে অশান্তি শুরু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত উপত্যকায় অন্তত ২৬টি স্কুল জ্বালিয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা। রাজ্য সরকার স্কুল খোলার চেষ্টা চালালেও তারা পরিষ্কার করে দিয়েছে, এই পদক্ষেপ তারা মানবে না।

জানা যাচ্ছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মরিয়া কেন্দ্র রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, উপত্যকার ৫০০-র বেশি স্কুলে নিয়মিত পরীক্ষা নেওয়া চালু করতে। ফলে ১৫ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে রাজ্য স্কুল বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষা, দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হবে ১৪ তারিখ থেকে।

নিরাপত্তা বাহিনী মনে করছে, জঙ্গিরা চায়, উপত্যকার গ্রামীণ এলাকার ছাত্রছাত্রীরা আধুনিক শিক্ষা ছেড়ে মাদ্রাসা বা ওই ধরনের কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যোগ দিক, যাতে তাদের কট্টর পন্থায় দীক্ষা দেওয়া সহজ হয়। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে পদক্ষেপ করেছে জম্মু কাশ্মীর হাইকোর্টও। পুলিশ ও প্রশাসনকে স্কুলগুলির নিরাপত্তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নিতে তারা নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি বলেছে, শিক্ষার এই ‘রহস্যময় শত্রু’দের খুঁজে বার করে কঠোর শাস্তি দিতে।