নয়াদিল্লি: কয়েকদিন আগেই মোদি সরকারের পরিসংখ্যান মন্ত্রক জানাল, চলতি বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে আটকে থাকতে চলেছে। আর্থিক বৃদ্ধি শ্লথ। বাজারে চাহিদার অবস্থা ভাল নয়। বেসরকারি লগ্নি, পরিকাঠামো উৎপাদন-সহ অর্থনীতির বিভিন্ন মাপকাঠি রয়েছে অস্বস্তিকর জায়গায়। এরইমধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে ২০১৯-র ডিসেম্বরে মুদ্রাস্ফীতির হার এক ধাক্কায় অনেকটাই লাফিয়ে পৌঁছল ৭.৩৫ শতাংশে। একমাস আগেও এই হার ছিল ৫.৫৪ শতাংশ।কিন্তু গত ডিসেম্বরের মুদ্রাস্ফীতির হারের এই বৃদ্ধি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লক্ষ্যমাত্রাকে ছাপিয়ে গিয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরের তুলনাতেও কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) বা গ্রাহক মূল্য সূচক বেশি। ওই সময় খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ২.১ শতাংশ। ২০১৪-র জুলাইয়ের পর মুদ্রাস্ফীতির এই হার সবচেয়ে বেশি। ২০১৪-র জুলাইয়ে মুদ্রাস্ফীতির হার পৌঁছে গিয়েছিল ৭.৩৯ শতাংশে। আর্থিক ঝিমুনির মধ্যে মুদ্রাস্ফীতির হারের এই ঊর্দ্ধগতি বৃদ্ধির হার নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।


ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস (এনএসও)-র তথ্য অনুসারে গ্রাহক খাদ্য মূল্য সূচক (সিএফপিআই) নভেম্বরের তুলনায় বেড়েছে।

শেষবারের ঋণনীতি পর্যালোচনায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কিং মুদ্রাস্ফীতির ঊর্দ্ধগতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান প্রধান লেন্ডিং রেট অপরিবর্তিত রেখেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে মুদ্রাস্ফীতির হারের বৃদ্ধি অত্যন্ত তাত্পর্য্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের আগামী ফেব্রুয়ারির ঋণনীতি পর্যালোচনা লেন্ডিং রেট অপরিবর্তিত রাখা হবে বলেই অনুমান।
মৌলিক মূল্যবৃ্দ্ধি ডিসেম্বরে সামান্য বেড়ে ৩.৭ শতাংশ হলেও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও সরকারের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে খাদ্য (সব্জি) মুদ্রাস্ফীতি। এর ধাক্কাতেই গত ডিসেম্বরের মুদ্রাস্ফীতির হার অনেকটাই বেড়েছে।
কেন্দ্র সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে মুদ্রাস্ফীতির হার চার শতাংশ (দুই শতাংশ বেশি বা কম) রাখার লক্ষ্য দিয়েছিল। কিন্তু এই হার সেই লক্ষ্যের চেয়ে বেশি।
আর কিছুদিন পরেই ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় মোদি সরকার তাদের দ্বিতীয় বাজেট পেশ করবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন হোঁচট খেতে থাকা অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানোর চেষ্টা জোরদার করেছেন। গত সপ্তাহেই মোদি ও সীতারামন শিল্প বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ ও মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করে আগামী বাজেট ও অর্থনীতির জন্য প্রস্তাব চেয়েছিলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। অর্থনীতির মূল বুনিয়াদ শক্তিশালী রয়েছে, প্রত্যক্ষ বিদেশী লগ্নিও খুবই ভালো, বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। রিয়েল এস্টেট ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রের সুরাহার জন্য সরকার ১০০ লক্ষ কোটি টাকার ঘোষণা করেছিল।