ধানবাদ: ঝাড়খণ্ডে ফের না খেতে পেয়ে মৃত্যুর ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এল। গত শনিবার ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে মৃত্যু হল এক রিক্সা চালকের। রেশন কার্ড নেই। তাই ভর্তুকি দামে সস্তার খাদ্যপণ্য পায়নি ঝরিয়া থানার ভালগরহা নিচে বাদান এলাকার বাসিন্দা ওই রিক্সা চালক বৈদ্যনাথ রবিদাসের পরিবার। এজন্য সাত দিন ধরে খাবার জোটেনি বৈদ্যনাথের। এর ফলেই মৃত্যু হয় তাঁর। এমনই দাবি বৈদ্যনাথের স্ত্রী পার্বতীর।


জেলা প্রশাসন অবশ্য এই দাবি খারিজ করে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, হাঁফানির অসুখ ছিল রবিদাসের। এই রোগে ভুগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

এ ব্যাপারে পার্বতী বলেছেন, রোগে প্রায় এক সপ্তাহ শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন তাঁর স্বামী। এর ওপর অনাহার। এতে রবিদাসের শারীরিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে।শেষপর্যন্ত মৃত্যু হয় তাঁর।

ধানবাদের ডেপুটি কমিশনার এ ডোড্ডে অনাহারে মৃত্যুর অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নিহত রবিদাসের স্ত্রী ও ছেলে-দুজনেই রোজগার করেন। তাই না খেতে পেয়ে মৃত্যু সম্ভব নয়।

ডোড্ডে বলেছেন, তাঁরা যে তথ্য পেয়েছেন তাতে দেখা গিয়েছে, ওই পরিবারের চারজন রোজগেরে সদস্য। তাঁদের কারুরই আয় ৩ হাজার টাকার কম নয়।

এ দিকে, এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্য ও গণবন্টন বিভাগের ডিরেক্টর সুনীল কুমার সিনহা।

জানা গেছে, গত চার বছর ধরে ওই পরিবারের রেশন কার্ড ছিল না। বহুবার চেষ্টা করেও মেলেনি রেশন কার্ড।

পার্বতী পরিচারিকার কাজ করেন। রবিবার ছিলেন রিক্সাচালক। এরপরও ওই পরিবারের নাম ছিল না দারিদ্র সীমার নিচে (বিপিএল) তালিকায়। এ জন্য সরকারি প্রকল্পে ভর্তুকি দামে রেশন পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল ওই পরিবার।

পার্বতী জানিয়েছেন, চার বছর আগে তাঁদের পরিবার বিপিএল তালিকাভূক্ত ছিল। সেই কার্ড ছিল রবিদাসের দাদা জাগো রবিদাসের নামে। জাগোর মৃত্যুর পর তাদের পরিবার বিপিএল তালিকা থেকে বাদ পড়ে।

বিপিএল কার্ড পাওয়ার চেষ্টা করেও তা পাওয়া যায়নি।

এরইমধ্যে ঝরিয়ার সার্কেল অফিসার কেডি সিংহ রবিদাসের শেষকৃত্য ও অন্যান্য কাজের জন্য ২০ হাজার টাকার চেক দিয়েছেন পার্বতীকে। তাঁর আশ্বাস, খুব শীঘ্রই রেশন কার্ড পাবে নিহতের পরিবার।

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই ঝাড়খণ্ডে আধার-এর সঙ্গে ‘লিঙ্ক’ না থাকায় বাতিল রেশন কার্ডে সস্তার চাল, ডাল না পাওয়ায় ১১ বছরের একটি মেয়ের অনাহারে মৃত্যু হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। ঝাড়খণ্ডের সিমডেগার জলডেগা জেলার কারিমাটি গ্রামে ওই অভিযোগ নিয়ে শোরগোল  পড়ে যায়। প্রশাসন অবশ্য এ ক্ষেত্রেও অনাহারে মৃত্যুর অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছিল। ১১ বছরের সন্তোষী কুমারীর মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে।