নয়াদিল্লি: গোপনীয়তার অধিকার কখনই নিরঙ্কুশ অধিকার হতে পারে না। রাষ্ট্রের ক্ষমতা থাকতেই পারে সেই অধিকারের ওপর যৌক্তিক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা। এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট।
গোপনীয়তার অধিকারকে সংবিধান অনুযায়ী মৌলিক অধিকারের আওতায় আনা যায় কি না, সেই নিয়ে মামলা চলছিল সুপ্রিম কোর্টে। এদিন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন ৯ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি চলছিল।
সেখানে, গোপনীয়তার অধিকারের পরিধি অথবা লঙ্ঘন পরীক্ষা করতে কোন আওতা ও সীমারেখা থাকা উচিত সেই নিয়ে আদালতকে সাহায্য করতে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে আহ্বান করে বেঞ্চ।
এই প্রসঙ্গে বেঞ্চ সমকামকে অপরাধ ঘোষণা করে শীর্ষ আদালতেরই রায়কে উল্লেখ করে জানায়, যদি গোপনীয়তার অধিকারের সীমা একেবারে মুক্ত করা হয়, তাহলে তো ওই রায়ের কোনও অর্থই থাকবে না।
সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি জে চেলামেশ্বর, বিচারপতি এস এ বোবড়ে, বিচারপতি আর কে অগ্রবাল, বিচারপতি আর এফ নরিম্যান, বিচারপতি অভয় মনোহর সাপ্রে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কল এবং বিচারপতি আব্দুল নাজির।
আদালত জানায়, হতে পারে সন্তান জন্ম দেওয়াটাও গোপনীয়তার অধিকারের আওতায় পড়বে। বাবা-মায়েরা বলতে পারবেন না, প্রত্যেক শিশুকে স্কুলে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই।
আদালতের মতে, গোপনীয়তার অধিকারের বিষয়বস্তুকে শ্রেণিভুক্ত করা হলে, আখেরে এই অধিকারই খর্ব হবে। বেঞ্চ বলে, গোপনীয়তার অধিকার কখনই এতটাই নিরঙ্কুশ হতে পারে না যে তা নিয়ন্ত্রণ করতে বা আইনের আওতায় আনতে অক্ষম হয় রাষ্ট্র।
আদালত এ-ও মনে করে যে তথ্য রক্ষার বিষয়টি এই ইস্যু থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বেঞ্চ জানায়, আমরা বৃহৎ তথ্যের যুগে বসবাস করছি। ফলে, তথ্য রক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ করতে দায়বদ্ধ রাষ্ট্র। তা সে অপরাধদমন হোক বা কর-সংক্রান্ত অথবা বিভিন্ন ক্ষেত্রে।
আদালতের মতে, ঋণ দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্ক যদি গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চায়, তাহলে তা কখনই গোপনীয়তার অধিকারের লঙ্ঘনের সামিল হবে না। তবে, কোনও ব্যক্তির যৌনতার অভিযোজন বা পছন্দ এবং যৌন সংসর্গের তথ্য অবশ্যই এই অধিকারের আওতায়।