পটনা:  বিহারের স্ট্রংম্যান এবং বিতর্কিত আরজেডি নেতা মহম্মদ শাহাবউদ্দীন দীর্ঘ ১১ বছর পর আজ মুক্তি পেলেন জেল থেকে। পটনা হাইকোর্ট শাহাবউদ্দীনের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করার পরই তিনি মুক্তি পান জেল থেকে। তাঁর বিরুদ্ধে সিওয়ানে অ্যাসিডে স্নান করিয়ে দুই ভাইকে খুন ও এই ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শীকে খুন করার অভিযোগ রয়েছে। তবে আজ ভাগলপুর জেলে জামিনে  মুক্তির পর আরজেডি সমর্থক এবং দলের বহু প্রাক্তন মন্ত্রী শাহাবউদ্দীনকে বিশাল সংবর্ধনা দেন।


জেল থেকে বেরিয়ে শাহাবউদ্দীনের মন্তব্য, সবাই জানে আমাকে এই খুনের মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আদালতই তাঁকে হাজতবাসের নির্দেশ দেয়। এবার সেই আদালতই তাঁকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিল। এছাড়াও গ্যাংস্টার এবং রাজনীতিবিদ শাহাবউদ্দীন জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজেকে পরিবর্তনের কোনও চেষ্টা করবেন না। কারণ, তিনি গত ২৬ বছর ধরে যেমন মানুষ ছিলেন, সেভাবেই তাঁকে জনসাধারণ গ্রহণ করেছে। তাই পরিবর্তনের কোনও প্রয়োজন নেই।

তবে তাঁর এই মুক্তির সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি শাহাবউদ্দীনের। আইন আইনের পথে চলবে। বিচার প্রক্রিয়াকে তিনি কোনওভাবেই প্রভাবিত করার চেষ্টা করবেন না। তাঁর দাবি, গত দশ বছরে তিনি কোনও রাজনৈতিক জনসভায় যাননি। অথচ, আজ তাঁর মুক্তির বিশাল সমর্থকরা তাঁকে স্বাগত জানাতে জেলের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন।

এরমধ্যেই হাইকোর্ট দুই ভাই গিরিশ রাজ ও সতীশ রাজের খুনের মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছে শাহাবউদ্দীনের। সিওয়ান থেকে চারবার সাংসদ পদে নির্বাচিত হয়েছেন আরজেডি-র এই নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে চল্লিশের বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ডজনখানেক বিচারাধীন মামলা রয়েছে।

২০০৫ সালের নভেম্বরে নয়াদিল্লিতে সাংসদের বাংলো থেকে শাহাবউদ্দীনকে গ্রেফতার করে বিহার ও দিল্লি পুলিশের একটি যৌথ দল। ২০১৫ সালে সিওয়ান আদালত শাহাবউদ্দনীকে দুই ভাই গিরিশ ও সতীশ রাজকে অপহরণ করে খুন করার ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করে।
ঘটনার সূত্রপাত ২০০৪ সালে। সেসময় খবরের শিরোনামে আসে সিওয়ানের ব্যবসায়ী চন্দ্রকিশোর প্রসাদের দুই ছেলে ও তাদের ছোট ভাই রাজীব রোশনের অপহরণের খবর। তাদের নিয়ে যাওয়া হয় শাহাবউদ্দীনের পৈত্তৃক গ্রাম প্রতাপপুরে। সেখানে রাজীবের সামনেই তাঁর দুই ভাই সতীশ ও গিরিশকে স্নান করানো হয় অ্যাসিডে। তারপর হত্যা করা হয়। পুরো ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ছিল রাজীব। ২০১৫-র জুনে সিওয়ানের নিম্ন আদালতে এই মামলায় হাজিরা দিতে গেলে, রাজীবকে কোনও এক অজ্ঞাত পরিচলয় ব্যক্তি হত্যা করে।