রাঁচি: পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় লালুপ্রসাদ যাদবের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাচ্ছে আরজেডি। আজ বিশেষ সিবিআই আদালতের রায়ের পর এমনই জানালেন আরজেডি-র প্রবীণ নেতা রঘুবংশ প্রসাদ। তিনি আদালত থেকে বেরিয়ে এসে বলেছেন, ‘আইনি লড়াই চলবে। আমরা হাইকোর্টে যাব। এছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। রাজনৈতিকভাবেও লড়াই করব আমরা।’

অপর এক আরজেডি নেতা আবদুল বারি সিদ্দিকি বলেছেন, ‘আমরা ৩ জানুয়ারির জন্য অপেক্ষা করছি। আদালত কী সাজা ঘোষণা করে সেটা দেখে দল পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করবে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, কয়েকজনের ক্ষেত্রে কেন কারাদণ্ড আর কয়েকজনের মুক্তি? বিজেপি ও জেডিইউ যেভাবে আগেই রায়ের পূর্বাভাস দিয়েছিল, তাতে মানুষ বিভ্রান্ত। লালুজির জেলে যাওয়া নতুন নয়। আগেও তাঁকে জেলে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবারই দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে ফিরে এসেছে আরজেডি। সেই কারণেই আমরা এখনও বিহারে এক নম্বর।’

বহুচর্চিত পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় আজ বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুকে দোষী সাব্যস্ত করেছে রাঁচির বিশেষ সিবিআই আদালত। ৩ জানুয়ারি হবে সাজা ঘোষণা। তবে আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মিশ্রকে বেকসুর খালাস করেছে তারা। লালুকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাঁচির বীরসা মুন্ডা জেলে। এই রায়ের পরেই ট্যুইট করে লালু বলেছেন, ‘ক্ষমতাশালী শ্রেণি ও ক্ষমতাশালী লোকজন সবসময়ই সমাজকে শাসক ও শোষিত শ্রেণিতে ভাগ করে। যদি নিচু জাতের কেউ এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে, তাহলে তাদের ইচ্ছাকৃতভাবে সাজা দেওয়া হবে।’

পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে লালুর বিরুদ্ধে ৬টি মামলা রয়েছে। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে দেওঘরের সরকারি কোষাগার থেকে পশুখাদ্য কেনার জন্য বরাদ্দ ৮৯.২৭ লাখ টাকা অবৈধভাবে তুলে নেওয়া সংক্রান্ত মামলার রায় বার হল এদিন। লালু সহ ১৭ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। ফলে আজ থেকে সাজা ঘোষণার দিন ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত তাঁকে জেলে থাকতে হবে।

২০১৩-য় প্রথম মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন লালু। তাঁর ৫ বছরের জেল হয়, বাতিল হয় সাংসদ পদ, ভোটে দাঁড়ানো নিষিদ্ধ হয়। কিন্তু সে বছরই ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্টে জামিন পেয়ে যান তিনি। আজ ওই কেলেঙ্কারির দ্বিতীয় মামলার রায় বার হল।

জাল নথি দেখিয়ে ১৯৯১-৯৪-এ বিহারের বিভিন্ন সরকারি কোষাগার থেকে ৯৫০ কোটি টাকা তুলে নেওয়া সংক্রান্ত মামলাই হল পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলা। পশুখাদ্য কেনার জন্য বরাদ্দ রাজ্য সরকারের ওই অর্থ বিহারের রাজনীতিক ও সরকারি আধিকারিকরা নয়ছয় করেন বলে অভিযোগ। সে সময় লালু ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।