নয়াদিল্লি: রাজ্য-রাজনীতির উত্তাপের প্রভাব এবার রাজ্যসভাতে। অগুস্তাওয়েস্টল্যান্ড চপার দুর্নীতির ঘটনায় নিয়ে রাজ্যসভায় কংগ্রেসকে নিশানা তৃণমূল কংগ্রেসের। এই চপার দুর্নীতিতে ঘুষের অভিযোগে উল্লিখিত ‘গাঁধী ও এপি, শশীকান্ত’-র পরিচয় প্রকাশের দাবি জানিয়ে সরব হল তৃণমূল। এদিন রাজ্যসভায় প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। এ বিষয়ে তাঁর মুলতুবী প্রস্তাব খারিজ হয়ে যাওয়ার পরও বিরত হননি সুখেন্দু। শেষপর্যন্ত তাঁকে দিনের মতো সভাকক্ষ থেকে বের করে দেন চেয়ারম্যান হামিদ আনসারি। এর প্রতিবাদে তৃণমূল সাংসদরা ওয়াক আউট করেন।


এদিন জিরো আওয়ারে ৩,৬০০ কোটি টাকার ১২ টি ভিভিআইপি চপার কেনাবেচার ক্ষেত্রে কারা ঘুষ নিয়েছেন, তা জানতে চেয়ে সরব হন সুখেন্দু। তিনি এ বিষয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন। তিনি বলেন, এই কেনাবেচার ক্ষেত্রে যাঁদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের নাম প্রকাশ করতে হবে। তিনি সভার অন্যান্য কাজ স্থগিত রেখে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার দাবি জানান।

ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কুরিয়েন জানান, জিরো আওয়ারে সভার অন্যান্য কাজ স্থগিত রেখে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনার কোনও বিধি নেই জানিয়ে সুখেন্দুর নোটিশ খারিজ করে দেন।

পরে প্রশ্নোত্তরপর্বেও প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেন তৃণমূল সাংসদ। ‘অনুমোদন’ ছাড়াই প্রসঙ্গটি উত্থাপন করতে তাঁকে বারণ করেন আনসারি। কিন্তু এতে থামানো যায়নি সুখেন্দুকে। ক্ষুব্ধ চেয়ারম্যান সভার ২৫৫ ধারা জারি করে সুখেন্দুকে দিনের মতো সভা থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন।

রাজ্যসভার ২৫৫ ধারা অনুযায়ী, চেয়ারম্যানের বিশৃঙ্খল আচরণের জন্য কোনও সদস্যকে দিনের মতো সভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন।

শেষপর্যন্ত ‘এই ঘুষখোর গাঁধী কে’ স্লোগান তুলে সভা থেকে বের হয়ে যান সুখেন্দু। তাঁর সঙ্গেই বেরিয়ে যান দলের অন্যান্য সাংসদরাও।

এরপরই কংগ্রেস সাংসদরা গুজরাত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন-এর ইস্যু তুলে আলোচনার দাবি জানাতে থাকেন। এই নিয়ে হৈহট্টগোলের মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতীন গড়কড়ি বলেন, যে ধারা তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হল, সেই ধারা কংগ্রেস সাংসদদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা উচিত।

উল্লেখ্য, রাজ্যে ভোটের ময়দানে তৃণমূলের প্রতিপক্ষ কংগ্রেস-বাম জোট। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সারদা, নারদ স্টিং অপারেশনের মতো দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ও সহ সভাপতি রাহুল গাঁধীও রাজ্য ভোট প্রচারে এসে দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ শানিয়েছেন। এরই পাল্টা হিসেবে সংসদে চপার দুর্নীতির ইস্যু তুলে তৃণমূল কংগ্রেসকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করল বলে মনে করা হচ্ছে।