শ্রীনগর: ঠাকুর্দা যখন কাশ্মীরে দিনের পর দিন ধর্মঘট ডেকে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলছিলেন, তাঁর ডাকে শয়ে শয়ে যুবক নিরাপত্তারক্ষীদের দিকে পাথর ছুঁড়ছিল, অভিযোগ, ঠিক সেই সময়ে তাঁরই নাতিকে চাকরি পাইয়ে দিতে আইনকানুন লাটে তুলেছিল রাজ্যের পিডিপি-বিজেপি সরকার। বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির নাতি আনিস উল ইসলামকে শের ই কাশ্মীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেকশন কমপ্লেক্সের রিসার্চ অফিসারের কাজ দিতে রাজ্য সরকারি চাকরির নিয়মকানুন লঙ্ঘন করা হয়েছে। লোভনীয় এই চাকরিতে পেনশন তো রয়েছেই, বার্ষিক বেতন ১২ লাখ টাকা।


রাজ্য পর্যটন দফতর সরাসরি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির অধীনে। যে রিসার্চ অফিসারের চাকরি আনিস পেয়েছেন, তার জন্য জম্মু কাশ্মীর সাবঅর্ডিনেট সার্ভিসেস রিক্রুটমেন্ট বোর্ড অথবা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মত রিক্রুটমেন্ট এজেন্সিকে কোনওরকম তথ্য দেওয়া হয়নি। যদিও সরকারি পদে নিয়োগ করতে ওই দুই এজেন্সিকে জানানো অত্যাবশ্যক। যদিও পর্যটন সচিব ফারুক শেখের দাবি, নিয়ম মেনেই আনিসের নিযুক্তি ঘটেছে। ওই পদের জন্য যাঁরা আবেদনপত্র পাঠান, তাঁদের মধ্যে আনিসকে যোগ্য মনে হয় তাঁদের।

যদিও শের ই কাশ্মীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেকশন কমপ্লেক্সের এক আধিকারিক অভিযোগ করেছেন, বহু আগে থেকেই পর্যটন সচিব আনিসকে চাকরিটি দেন। জঙ্গি নেতা বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর যখন গিলানি সহ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ডাকে কাশ্মীর জ্বলছিল, তখনই চুপিসাড়ে নিয়োগ করা হয় আনিসকে। তবে সিবিআই ভেরিফিকেশন এখনও না হওয়ায় মাইনে পাচ্ছেন না আনিস। একসঙ্গে তাঁকে পুরো বেতন মিটিয়ে দেওয়া হবে।

পঞ্জাবের জলন্ধর থেকে এমবিএ করেছেন আনিস। সিআইডি রিপোর্ট তাঁর বিরুদ্ধে থাকায় ২০০৯ সালে পাসপোর্ট পাননি তিনি। পরে হাইকোর্টের রায়ে অবশ্য পাসপোর্ট পান। ব্রিটেনে গিয়ে করেন আর একটি এমবিএ।

ওই পদের আর এক আবেদনকারী অভিযোগ করেছেন, গত বছর অক্টোবরে তাঁর আবেদনপত্র গৃহীত হয়। কিন্তু কখনও ইন্টারভিউয়ের ডাক আসেনি। ১৪০জনের মত আবেদন করেছিলেন কিন্তু বাছাই করা অল্প কয়েকজন ছাড়া কেউ ডাক পাননি বলে তাঁর অভিযোগ।

গিলানির এক নাতনি বিমানসংস্থায় ক্রুর পদে রয়েছেন। তাঁর এক ছেলে নইম চিকিৎসক। আগে সরকারি স্বাস্থ্য দফতরে ছিলেন। গত বছর গিলানির ডাকে কাশ্মীরের স্কুল কলেজ যখন বন্ধ ছিল, তখনও খোলা ছিল বিশেষ একটি স্কুল। গিলানির নাতনি, নইমের বড় মেয়ের পরীক্ষা চলছিল ওই স্কুলে।