নয়াদিল্লি: অসমে চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) প্রকাশের সময়সীমা এক মাস পিছল। ৩১ জুলাই থেকে তা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তৈরির প্রক্রিয়া পরিচালনকারী কোঅর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা যেসব রিপোর্ট পেশ করেছেন, সেসব খতিয়ে দেখে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি আর এফ নরিম্যানকে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ। শীর্ষ আদালত আগে সময়সীমা বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছিল।
তবে খসড়া এনআরসি-তে ভুলবশতঃ কোনও কোনও নাম বাদ দেওয়া, কোনও কোনও নাম ঢোকানোর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তালিকা থেকে ২০ শতাংশ নমুনা নতুন করে পরীক্ষার যে দাবি তোলা হয়েছিল, তা খারিজ হয়ে গিয়েছে। ভুল করে কাদের বাদ দেওয়া বা ঢোকানো হয়েছে, খুঁজে দেখতে ওই দাবি করেছিল কেন্দ্র ও অসম সরকার। কেন্দ্র ও অসম সরকারের তরফে বক্তব্য পেশ করেন যথাক্রমে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপাল ও সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
দুই সরকারই গত ১৯ জুলাই শীর্ষ আদালতকে স্পষ্ট বলে, ভারত দুনিয়ার উদ্বাস্তুদের রাজধানী হতে পারে না। অসমে এনআরসি আপডেট করার প্রক্রিয়া ৩১ জুলাইয়ের সময়সীমা বাড়ানোর দাবিও করে। পাশাপাশি বহু বেআইনি অনুপ্রবেশকারীর নাম, বিশেষত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে, নাগরিকপঞ্জিতে ঢুকেছে, এই আশঙ্কা দূর করতে নমুনা ফের পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়ার আবেদনও করে তারা। দুই সরকারই জানায়, নাগরিকপঞ্জি তৈরির প্রক্রিয়ায় স্থানীয় অফিসাররা যুক্ত থাকার ফলে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে কয়েক লক্ষ লোকের নাম অন্যায় ভাবে এনআরসি-তে উঠেছে। গত ১৭ জুলাই কেন্দ্র ও অসম সরকার সুপ্রিম কোর্টে বলে, বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে অসমের জেলাগুলিতে চূড়ান্ত এনআরসি-তে অন্তর্ভূক্ত নামগুলির ২০ শতাংশ নমুনা ও বাকি জেলাগুলিতে তালিকায় থাকা নামের ১০ শতাংশ নমুনা খতিয়ে দেখা হোক। ভারতীয় নাগরিকদের নাম কেটে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নাম তোলা হয়েছে বলে দাবি করে দুই সরকার। তারা ২০১৮-য়. দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের এক নির্দেশেরও উল্লেখ করে যাতে বলা হয়েছিল, খসড়া এনআরসি-তে অন্তর্ভুক্ত লোকজনের ১০ শতাংশ নতুন করে খতিয়ে দেখার কথা তারা ভেবে দেখতে পারে।
সর্বোচ্চ আদালত বিষয়টিকে বিরাট মাপের মানবিক সমস্যা বলে উল্লেখ করে, রাজ্যের এনআরসি সমন্বয়কারী অফিসারকে মুখ বন্ধ করা খামে রিপোর্ট পেশ করে জানাতে বলে, নাগরিকত্ব দাবি করা লোকজনকে নতুন করে তথ্য ও প্রমাণপত্র জমা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হলে তার কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে।