তিন-তালাক: চার সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রের জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট
Web Desk, ABP Ananda | 05 Sep 2016 12:30 PM (IST)
নয়াদিল্লি: ‘তিন-তালাক’ ও মুসলিম মহিলাদের দুরবস্থা নিয়ে একাধিক মামলার জবাব দাখিল করার জন্য কেন্দ্রকে চার সপ্তাহ সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন শুনানির সময় কেন্দ্রের তরফে সওয়াল করে এই প্রসঙ্গে জবাব দাখিল করার জন্য আরও সময় চান অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তূষার মেটা। এর পরই কেন্দ্রকে চার সপ্তাহ সময় দেয় প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ। এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর তিন-তালাক প্রথার সমর্থনে সওয়াল করেছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড (এআইএমপিএলবি) এবং জমিয়ত-এ-উলেমা। এআইএমপিএলবি-র ব্যাখ্যা, সামাজিক সংস্কারের নামে একটি সম্প্রদায়ের অভ্যন্তরীণ আইনকে ‘বদল’ করা যায় না। বিবাহবিচ্ছেদের সময় মুসলিম মহিলারা যে বৈষম্যের শিকার বলে অভিযোগ উঠেছে, তাও খারিজ করে বোর্ড। শীর্ষ আদালতে তারা জানিয়ে দেয়, বহুবিবাহ প্রথা থেকে শুরু করে তিন-তালাক (তালাক-এ-বিদাত) এবং নিকাহ-হালাল বিষয়গুলি হল আইন প্রণয়নকারী নীতি। এতে হস্তক্ষেপ করা যায় না। তাদের মতে, মুসলিম বিবাহ ও বিচ্ছেদ সম্পর্কে যে বিধান দেয় বোর্ড, তা কোরান মোতাবেক। আদালত, সেই বিধানের ওপর নিজস্ব বিধান চাপাতে পারে না। প্রসঙ্গত, ইশরত জহান নামে কলকাতা-নিবাসী ২৬ বছরের এক মহিলাকে দুবাই থেকে ফোনে তিন-তালাক দেন তাঁর স্বামী। মহিলা শীর্ষ আদালতে আবেদন করে জানান, ১৯৩৭ সালের মুসলিম পার্সোনাল ল (শরিয়া আইন)-এর ২ নম্বর ধারাটি অসাংবিধানিক। কারণ তা সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা (সমতা), ১৫ (বৈষম্যহীনতা), ২১ (জীবন) এবং ২৫ (ধর্ম) লঙ্ঘন করছে। তাঁর দাবি, তিন তালাক (তালাক-এ-বিদাত) কখনও বিবাহবিচ্ছেদের বৈধ উপায় হতে পারে না। তিনি একইসঙ্গে বহুবিবাহ রীতি এবং নিকাহ হালাল-কেও চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টে। মহিলা জানান, তালাক দেওয়ার পর, শ্বশুরবাড়িতে তাঁর জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। কারণ, তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকী, তাঁর সন্তানদেরকেও তাঁর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন তারা কোথায় আছে তিনি জানেন না। এমনকী পুলিশও তাঁকে সাহায্য করছে না। তিন তালাকের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন সায়রা বানো নামে আরক মুসলিম মহিলাও। সব অভিযোগকে একত্রিত করে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রককে নোটিস পাঠায় সর্বোচ্চ আদালত।