নয়াদিল্লি: ধর্ম বদলে হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়া কেরলের মেয়ে হাদিয়ার বিয়ে ফিরিয়ে দিল সু্প্রিম কোর্ট। মুসলিম প্রেমিক শাফিন জাহানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে বাতিল করে কেরল হাইকোর্টের দেওয়া রায় খারিজ করে দিল প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এ এম খানবিলকর ও বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। তাঁর মুখে হাসি ফোটাল বিচারপতিদের রায়। বেঞ্চ বলেছে, হাদিয়া নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেছেন। নিম্ন আদালত তাতে হস্তক্ষেপ করে ঠিক করেনি।
হাদিয়া 'লাভ জেহাদে'র শিকার বলে দাবি করা হয়েছিল। গত বছরের মে মাসে কেরল হাইকোর্ট হাদিয়া ও শাফিনের বিয়েকে 'লাভ জেহাদের' উদাহরণ আখ্যা দিয়ে তা বাতিল করে দেয়। হাদিয়াকে তাঁর বাবা-মায়ের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাইকোর্টের নির্দেশে। পাল্টা সেই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেন শাফিন।
জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) দাবি করে, কেরলে হিন্দু মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে জড়িয়ে ধর্মান্তরণ, তারপর বিয়ে করার একটিা প্রবণতা, প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট এর পরিপ্রেক্ষিতে হাদিয়ার ধর্মবদল ও বিয়ের ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
তবে গত বছরের ২৭ নভেম্বর সর্বোচ্চ আদালত হাদিয়াকে তাঁর বাবা-মায়ের হেফাজত থেকে মুক্ত করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে কলেজে ফের যোগ দিতে বলে। হাদিয়া স্বামীর কাছে যেতে দেওয়ার অনুমতি চাইলেও তা মঞ্জুর করেনি সুপ্রিম কোর্ট।
আজ হাদিয়া, শাফিনের বিয়ে জিইয়ে তুলতে বললেও এ ব্যাপারে এনআইএ যথারীতি তাদের তদন্ত চালিয়ে যেতে পারে বলেও জানিয়েছে বেঞ্চ।
হাদিয়ার বাবা কে এম অশোকন অবশ্য মেয়ের সঙ্গে শাফিনের বিয়ে টিঁকে থাকুক, একেবারেই চাইছেন না। তিনি কেরল হাইকোর্টের বিয়ে বাতিলের নির্দেশ খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের আজকের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন পেশ করবেন কিনা, ভাবছেন। এদিনও অশোকন দাবি করেন, তাঁর মেয়ের সঙ্গে শাফিনের বিয়েটা একটি বিশেষ গোষ্ঠীর 'সাজানো' ব্যাপার। এব্যাপারে কোনও সংশয়ই তাঁর নেই। তিনি ফের আদালতকে এটা বোঝানোর চেষ্টা করবেন। প্রসঙ্গত, অশোকনের দেওয়া হেবিয়াস কর্পাস পিটিশনের ভিত্তিতেই হাদিয়ার বিয়ে বাতিল করেছিল হাইকোর্ট। ২০১৬-য় শাফিন, হাদিয়ার বিয়ে হয়।
অশোকন অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট এনআইএ তাদের তদন্ত চালিয়ে যেতে পারে বলে জানানোয় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, শীর্ষ আদালত এনআইএ তদন্ত বাতিল করেনি। আদালত এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কেননা শাফিন জাহান তো সন্ত্রাসবাদী হতেই পারে।
মেয়েকে একজন সন্ত্রাসবাদীর সঙ্গে যেতে দেওয়া একজন বাবার কাছে গভীর যন্ত্রনার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।