নয়াদিল্লি: শুধু ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে কয়েক ঘণ্টা কাটানোই নয়, ভারতীয় ফৌজের সঙ্গে রীতিমতো বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিল চিনা সেনা জওয়ানরা। প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে এমনটাই খবর।

ফের অশান্ত ভারত-চিন সীমান্ত। গত বৃহস্পতিবার অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ধস্তাধস্তি বেধে যায় ভারতীয় ফৌজ এবং চিনা সেনার মধ্যে। সংবাদসংস্থা খবর অনুযায়ী, পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র ২৭৬ জন জওয়ান ভারতীয় ভূখণ্ডে বলপূর্বক প্রবেশ করার চেষ্টা করলে রুখে দাঁড়ায় প্রহরারত ভারতীয় জওয়ানরা। তখনই দুপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।

ঘটনাটি ঘটেছে অরুণাচল প্রদেশে ভারত-চিন সীমান্ত লাগোয়া লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি)-র ইয়াংসি অঞ্চলে। চিনা সেনার দাবি, ওই অঞ্চলটি তাদের। এরপরই সেখানে প্রহরারত ভারতীয় জওয়ানরা চিনা সেনার আগ্রাসনকে রুখে দেয়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় আরও বাহিনী।

প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে খবর, প্রায় ২১৫ জন চিনা সেনা জওয়ান শকর তিকরি দিয়ে অনুপ্রবেশেপ চেষ্টা করে। একইসঙ্গে, থাং লা, মেরা গ্যাপ এবং ইয়াকি-ল দিয়েও ২০ জন করে চিনা সেনা জওয়ান ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু, ভারতীয় জওয়ানরা প্রতিরোধ গড়ে তোলায় সে যাত্রায় রণে ভঙ্গ দেয় পিএলএ।

ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজনা প্রশমন করেন চিনা সেনার উচ্চপদস্থ অফিসার। দোভাষীকে সঙ্গে নিয়ে এসে ভারতীয় সেনার কম্যান্ডিং অফিসারের সঙ্গে দেখা করে চকোলেট বিনিময় করেন। এদিকে, ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বেজিং। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু ক্যাং জানান, যেহেতু ভারত-চিন সীমান্ত নির্দিষ্টকরণ নেই, তাই এধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে।

চিনা সেনার এই অনুপ্রবেশ এমন একটা সময় এসেছে, যখন বিশ্বের পরমাণু সরবরাহকারী রাষ্ট্রের তালিকায় ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করছে বেজিং। ফলে, বিষয়টিকে হাল্কাভাবে নিতে নারাজ নয়াদিল্লি। এই প্রথম নয়। এর আগে বহুবার, অরুণাচল ও লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে চিনা সেনা।

উভয় দেশ বিভিন্ন সময়ে আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভুত সমস্যার সমাধান খোঁজার চেষ্টা চালিয়েছে। যদিও, বিদেশমন্ত্রেকর দাবি, বর্ডার ডিমারকেশন বা সীমান্তের নির্দিষ্টকরণ করার প্রস্তাব ভারতের তরফ থেকে দেওয়া হলেও, বেজিং এখনও পর্যন্ত তাতে ইতিবাচক সাড়া দেয়নি।