মুম্বই:বহুদিনের জোটসঙ্গী বিজেপির ওপর দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষুব্ধ ছিল শিবসেনা। আর এবার জোট পুরোপুরি ভেঙে দিয়ে তারা একাই লড়তে চলেছে আগামী লোকসভা ভোটে।


উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা তাদের ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ মিটে ঘোষণা করেছে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোট তারা একাই লড়বে, অর্থাৎ বিজেপির হাত ছাড়ছে তারা। এ নিয়ে একটি প্রস্তাব আনেন দলীয় সাংসদ সঞ্জয় রাউত, তা সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়ে গিয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সেনাই এতদিন চেষ্টাচরিত্র করে বিজেপির সঙ্গে জোট বজায় রেখেছিল।

বিজেপি-শিবসেনার সম্পর্ক আজকের নয়, নব্বইয়ের দশকে বালাসাহেব ঠাকরে, অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবাণীরা এই জোটে সিলমোহর দেন। সেনাই বিজেপির প্রাচীনতম জোটসঙ্গী। মহারাষ্ট্রে সেনা-বিজেপি জোট ক্ষমতায় এলে সেনা নিত মুখ্য ভূমিকা, বিজেপি থাকত সহযোগীর ভূমিকায়। আর আজ সেনা প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরের জন্মদিনেই সেই জোট ভেঙে গেল।

শিবসেনার এই ঘোষণাকে অবশ্য খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ। তিনি বলেছেন, বিজেপির জোট শরিক শিবসেনার এ ধরনের মন্তব্য সম্পর্কে তাঁরা অভ্যস্ত। দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের অবকাশে সাংবাদিকদের ফড়নবীশ বলেছেন, 'ওরা তো অনেক কিছুই বলছে। এখন দেখা যাক। এখনও পর্যন্ত ওরা সরকারের শরিক। আর এই সরকার মেয়াদ সম্পূর্ণ করবে'।
এ ধরনের হুমকিতে সরকারের কাজে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই মন্তব্য করেছেন ফড়নবীশ। তিনি বলেছেন, 'অতীতেও এ ধরনের মন্তব্যের কথা শুনেছি..এতে আমি অভ্যস্ত। বিজেপি ও শিবসেনার জোট এখনও পর্যন্ত মসৃণভাবেই চলছে'।

কিন্তু বর্তমান এনডিএ সরকারের আমলে সেনা-বিজেপি সম্পর্ক মোটেই ভাল চলছিল না। মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা দখল নিয়ে দু দলের তিক্ত দ্বন্দ্ব হয়, শেষমেষ বিধানসভা ভোটে আলাদা লড়ে দুই দল। কিন্তু দেখা যায়, ভোটে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি, পিছিয়ে পড়েছে বাল ঠাকরে ও রাজ ঠাকরে বিহীন সেনা। তারপর তারা একসঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করলেও মুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ। কিন্তু ফড়ণবীশ সরকারকে সমর্থন করলেও বিজেপির সঙ্গে সেনার সম্পর্কের মোটেও উন্নতি হয়নি। কৃষকের ঋণ মাফ থেকে নোটবাতিল, জিএসটি-কোনও ইস্যুতে বিজেপিকে সমর্থন করেনি সেনা। এমনকী গুজরাত বিধানসভায় আগের থেকে ভাল ফল করার জন্য তারা কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর খোলাখুলি প্রশংসা করেছে।

বৃহন্মুম্বই পুরনিগম ভোটেও দুই দল আলাদা আলাদা করে লড়ে।

মহারাষ্ট্র বিধানসভায় এখন বিজেপির বিধায়কসংখ্যা ১২২, শিবসেনার ৬৩। কংগ্রেসের বিধায়কসংখ্যা ৪২ ও এনসিপির ৪১।