মুম্বই: শিনা বোরা হত্যা মামলায় রাজসাক্ষী হওয়ায় অভিযুক্ত শ্যাম রাইকে ক্ষমা করে দেওয়ার আবেদনে সাড়া দিল মুম্বই আদালত।

শিনা হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত শিনার মা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের প্রাক্তন গাড়িচালক হল শ্যাম রাই। মামলায় রাজসাক্ষী হওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানায় শ্যাম । আবেদনে সাড়া দিয়ে শ্যামকে ক্ষমা করে দেওয়ার আর্জিও মঞ্জুর করেন বিচারপতি। শিনা হত্যাকাণ্ডে ইন্দ্রাণী ও অন্য অভিযুক্তদের ভূমিকা প্রমাণ করতে শ্যামের বয়ান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে পুলিশ।

গত মাসে এই হাই-প্রোফাইল হত্যা-মামলায় রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করে শ্যাম। একইসঙ্গে, ক্ষমার আবেদনও করে। এই মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-ও জানিয়ে দেয়, শ্যামের আবেদনে তাদের কোনও আপত্তি নেই। এদিন বিশেষ আদালতের বিচারক এইচ এস মহাজন শ্যামের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাঁকে ক্ষমা মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তিহাড় জেলে বন্দি শ্যাম।

তবে, বিচারক জানিয়ে দেন, রাজসাক্ষী হওয়ায় এবার আদালতের সামনে পূর্ণ সত্যই বলতে হবে শ্যামকে। শ্যামের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাকে পূর্ণ সত্য বলতে হবে। কী কী জানেন, কী ঘটেছিল, আপনি কী করেছিলেন সবটাই আদালতের সামনে প্রকাশ করতে হবে। উত্তরে শ্যাম বলে, সে সব জানাতে প্রস্তুত।



প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ঘটা এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যফাঁস হয়, যখন ঘটনার তিন বছর পর গত বছরের অগাস্ট মাসে শ্যাম গ্রেফতার হয়। বস্তুত, এই মামলায় তাকেই প্রথম গ্রেফতার করে পুলিশ। তার থেকে তথ্য পেয়েই মামলায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। শ্যামের গ্রেফতরি এই হত্যা-মামলার রহস্য উন্মোচন করেছিল।

অভিযোগ, প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খন্না এবং শ্যামকে সঙ্গে নিয়ে আগের সম্পর্ক থেকে জন্ম নেওয়া নিজের মেয়ে বছর চব্বিশের শিনাকে হত্যা করেন ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। রহস্যের উন্মোচন হয় যখন মহারাষ্ট্রের রায়গড়ের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয় শিনার দেহ। এই ঘটনায় সঞ্জীব, ইন্দ্রাণী এবং শ্যাম ছাড়াও গ্রেফতার হন ইন্দ্রাণীর বর্তমান স্বামী তথা মিডিয়া ব্যারন পিটার মুখোপাধ্যায়। কারণ, সিবিআই-এর দাবি, এই হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল পিটারও।

এরপর, বিশেষ সিবিআই আদালতের কাছে জবানবন্দি দিতে গিয়ে শ্যাম স্বীকার করে, সে নিজে থেকেই রাজসাক্ষী হতে চেয়েছে। এর জন্য তার ওপর কোনও প্রকার চাপসৃষ্টি করা হয়নি। সে এ-ও জানায়, ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় সে অনুতপ্ত।