নয়াদিল্লি:  বেজিংয়ের তরফে একাধিক চাপ রয়েছে, তা সত্ত্বেও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড়ই রয়েছে নয়াদিল্লি। সিকিম-তিব্বত-ভুটান, সীমান্তে এই তিন জায়গার সংযোগস্থল থেকে এখনই সেনা সরাচ্ছে না ভারত। প্রসঙ্গত, কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকা থেকে মাত্র তিরিশ কিমি দূরেই রয়েছে জলঢাকা নদীর কাছে অবস্থিত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প।

প্রসঙ্গত, ঝালংয়ের কাছে জলঢাকা নদীর ওপর থাকা এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি ভুটান সীমান্ত থেকে খুব বেশি দূরে নয়। এখান থেকেই কিছুটা দূরে জলডাকা, তোরসাকে সঙ্গে নিয়ে ব্রহ্মপুত্রে গিয়ে মিশেছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, চিন যদি কোনওভাবে ভুটানের ডোকলামের ওপর দিয়ে রাস্তা বানানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্যে উঠেপড়ে লাগে, তাহলে চাপে চলে আসবে এই এলাকা। এছাড়াও কূটনৈতিক মহলের দাবি, কোনওভাবে যদি এই এলাকার ওপর নিজেদের অধিকার কয়েম করতে সক্ষম হয় বেজিং, তাহলে বিপদঘণ্টা বাজচ্ছে গোটা শিলিগুড়ির ওপর। এমনকি বাংলা-অসম সড়ক পথটিও এই এলাকা দিয়ে গেছে। এখানে কোনও রকম অশান্তি বাংলার সঙ্গে উত্তর-পূর্বের যোগাযোগও সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই সমস্ত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখেই, চিনের তরফে কোনও রকমের আশ্বাসবার্তা ছাড়া, এই এলাকা থেকে এখনই সেনাবাহিনী সরাতে নারাজ নয়াদিল্লি।

তবে সীমান্তের ওই এলাকায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর রাস্তা নির্মাণের কাজ আটকানোর পদক্ষেপটি মোটেই ভাল ভাবে নেয়নি বেজিং। এদিকে ভুটান চিনা সেনাকে তাদের এলাকায় প্রবেশ না করার বিষয় সাবধান করে দিয়েছে। এলাকাটি নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, চিন যদি একচ্ছত্রভাবে এগোতে থাকে, তাহলে ভারতের সঙ্গে যেমন চুক্তি লঙ্ঘিত হবে, তেমনই ভুটানের সার্বভৌমত্বের ওপরও তার প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। প্রসঙ্গত, চিন এইমুহূর্তে তাদের রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে আসতে নারাজ, কারণ, এভাবেই ভারতের প্রতিরক্ষাবাহিনীর ক্ষমতার পরীক্ষা নিচ্ছে বেজিং। আপাতত কূটনৈতিক স্তরে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই দুদেশেকে তাদের নীতি থেকে কিছুটা পিছিয়ে আনতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।