নয়াদিল্লি: কেন্দ্র শাসিত জম্মু কাশ্মীরের পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হচ্ছে, তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সহ গৃহবন্দি নেতানেত্রীদের শিগগিরই মুক্ত করা হবে। এক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এ কথা জানিয়েছে। যদিও নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমা জানায়নি তারা।


কংগ্রেসের আনন্দ শর্মার নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র বিষয়ক এই স্থায়ী কমিটিতে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয়কুমার ভাল্লা, অতিরিক্ত সচিব জ্ঞানেশ কুমার ও অন্যান্য আধিকারিক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাঁদের কাশ্মীরের সাম্প্রতিকতম পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে। শোনা যাচ্ছে, কমিটির কয়েকজন সরকারি আধিকারিকদের কাছে কাশ্মীর যাওয়ার অনুমতি চেয়ে অনুরোধ করেন। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। লোকসভা ও রাজ্যসভা সদস্যরা মূলত জানতে চান কাশ্মীরের ৩ বারের মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লার ব্যাপারে। ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ফারুক গৃহবন্দি, তিনিই একমাত্র নেতা যাঁকে কাশ্মীরের জন সুরক্ষা আইনে গৃহবন্দি করা হয়েছে। এছাড়া তাঁরা অন্য ২ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতিকে দীর্ঘ সময় ধরে গৃহবন্দি করে রাখার বিরোধিতা করেন। জবাবে আধিকারিকরা বলেন, যাঁরা বন্দি রয়েছেন তাঁরা চাইলে সংশ্লিষ্ট ট্রাইবুন্যালে যেতে পারেন, যেতে পারেন হাইকোর্টেও।

বন্দি নেতানেত্রীদের মুক্তি দেওযার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই মুক্ত করা হয়েছে, বাকিদেরও ধীরে ধীরে ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে কোনও সময়সীমা তারা দেয়নি। স্বরাষ্ট্র সচিব ভাল্লা সাংসদদের বলেন, জম্মু কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, স্কুল খুলে গিয়েছে, চালু হয়েছে আপেল ব্যবসাও। সাংসদরা ৫ অগাস্ট থেকে উপত্যকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রক তাঁদের বলেছে, জঙ্গি নাশকতা আটকানো ও সমাজবিরোধীদের মিথ্যে খবর ছড়ানো বন্ধ করতে এই পদক্ষেপ। আরও বলেছে, ১৯৯০ থেকে এখন পর্যন্ত জম্মু কাশ্মীরে ৭১,২৫৪টি সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ ঘটেছে, এতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪,০৪৯ জন সাধারণ মানুষ ও ৫,২৯৩ জন নিরাপত্তাকর্মী। খতম হয়েছে ২২,৫৫২ জন জঙ্গিও।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছে, যাবতীয় কেন্দ্রীয় আইনকানুন এই নতুন কেন্দ্রশাসিত প্রদেশগুলিতে চালু হবে। রাজ্যের যে নির্দিষ্ট আইনগুলি কেন্দ্রীয় আইন চালু করতে দিচ্ছিল না, তা বাতিল করা হয়েছে। রাজ্যের অন্যান্য আইনকে ভারতীয় সংবিধানের অনুকূল করা হবে। সরকারি আধিকারিকরা কমিটি সদস্যদের ভারতের নতুন রাজনৈতিক মানচিত্রও দেখান, যাতে জম্মু কাশ্মীর ও লাদাখকে আলাদা আলাদা কেন্দ্র শাসিত প্রদেশ হিসেবে দেখানো হয়েছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও গিলগিট বালটিস্তানকেও দেখানো হয়েছে কেন্দ্র শাসিত প্রদেশগুলির মধ্যে।