নয়াদিল্লি ও মুম্বই: সেনার ব্রিটিশ আমলের সহায়ক প্রথা সামনে আনা জওয়ানের রহস্যজনকভাবে মৃত্যু। আর গোটা ঘটনায় ওয়েবসাইটের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করল সেনা।


বৃহস্পতিবার সকালে মহারাষ্ট্রের দেওলালি ক্যান্টনমেন্টের একটি পরিত্যক্ত সেনা ব্যারাকে রয় ম্যাথুজ নামে ওই জওয়ানের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। দেহটিতে পচন ধরায় পুলিশের অনুমান, অন্তত দিনতিনেক আগে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।


৩৩ বছরের ম্যাথুজ প্রায় ১৩ বছর সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তিনি ছিলেন গানার। গত মাসে একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত স্টিং ভিডিওয় দেখা যায়, ম্যাথুজ সহ বেশ কয়েকজন সেনা কর্মী ঊর্ধ্বতন অফিসারদের বাড়িতে ফাইফরমাস খাটছেন। তাঁদের পোষা কুকুর চরাতে নিয়ে যাচ্ছেন, স্কুলে পৌঁছে দিচ্ছেন ছেলেমেয়েদের।


ব্রিটিশ আমলের এই প্রথাকে বলা হয় সহায়ক, এর মাধ্যমে নিম্ন পদমর্যাদার সেনা কর্মীরা অফিসারদের বাড়ির কাজকর্ম করেন। ওই ভিডিও প্রকাশের পর প্রশ্ন ওঠে, পুরনো এই প্রথার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে।


ভিডিওটি প্রকাশের পর ম্যাথুজের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। তবে গত মাসের ২৫ তারিখ থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁকে। তারপর গতকাল উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। দেওলালি এলাকার আর্টিলারি সেন্টারের এক কর্নেল পদমর্যাদার অফিসারের অধীনে সহায়ক ছিলেন ম্যাথুজ।


ভিডিও প্রকাশের পর তাঁর ওপর কোনও ধরনের নির্যাতন চলে কিনা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে জানা গিয়েছে, ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর বেশ কয়েকজন অফিসার ম্যাথুজকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।


শোনা যাচ্ছে, ২৫ তারিখ ইউনিট ছেড়ে পালান তিনি। তখন থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করা হয় বলে খবর। তবে সেনা বলছে, ২৪ তারিখ ওই ভিডিও প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিখোঁজ হয়ে যান ম্যাথুজ। অফিস থেকে ছুটিও নেননি তিনি।


এদিকে, এদিন সেনার তরফে দাবি করা হয়, ভিডিও প্রসঙ্গে ম্যাথুকে কখনই জেরা করা হয়নি।উল্টে গোটা ঘটনায় ওয়েবসাইটের ঘাড়েই দোষ চাপাল সেনা।


তারা জানিয়েছে, যে সংবাদমাধ্যমে (নিউজ পোর্টাল) ওই জওয়ানের ভিডিও প্রকাশ পেয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন পরিস্থিতিতে ওই জওয়ান আত্মহত্যা করেছে, তার তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।