শ্রীনগর: শ্রীনগর লোকসভা উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল কাশ্মীর উপত্যকা। ভাঙচুর, অগ্নি-সংযোগ থেকে শুরু করে বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে সংঘর্ষ—বাদ গেল না কিছুই।
শেষ খবর মেলা পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। এসবের মাঝে জোর ধাক্কা খেয়েছে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মাত্র সাড়ে ৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।
জানা গিয়েছে, এদিনের হিংসায় বাডগাম জেলাতেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। চার-এ-শরিফের পাখেরপোরা ও বীরওয়া অঞ্চলে দুজন করে মারা গিয়েছেন। অন্যদিকে, চাদুরায় একজন মারা গিয়েছেন। এছাড়া, গুলমার্গের পথে ও মাগাম শহরেও একজন মারা গিয়েছেন।
আগেই ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সদস্যরা। অভিযোগ, রবিবার ভোট শুরু হতেই বিভিন্ন বুথে ঢুকে ব্যাপক হামলা চালায় কয়েকশো বিচ্ছিন্নতাবাদী।
কোথাও, ইভিএম মেশিন ভাঙচুর করে বুথ লুঠ করে। পেট্রোল বোমা দিয়ে গান্ডেরবল জেলার একটি বুথ উড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। হুমকি দেয় ভোট দিতে আসা সাধারণ মানুষদের।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, হিংসার ও প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জেরে বাডগাম জেলার প্রায় ৭০ শতাংশ বুথ থেকে পালিয়ে যান ভোটকর্মীরা। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের লক্ষ্য করে পাথর ও পেট্রোল বোমা ছুঁড়তে থাকে বিক্ষোভকারীরা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের সহায়তায় বাহিনী নামানো হয়। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে প্রথমে শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় নিরাপত্তাবাহিনী। কিন্তু, তাতেও কোনও কাজ না হওয়ায়, সরাসরি গুলি চালাতে বাধ্য হয় নিরাপত্তাবাহিনী।
গুরুতর আহত হয়েছেন ৫ জন নাগরিক। এদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া, ১০০ জন নিরাপত্তারক্ষীও আহত হয়েছেন বলে খবর। নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে সোম ও মঙ্গল দু’দিন হরতালের ডাক দিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।
হামলার প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই পড়েছে ভোটদানে। ভোট পড়েছে মাত্র ৬.৫ শতাংশ। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক শান্তমনু ফের পুনর্নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তিনি জানান, সম্ভবত ৫০-১০০ বুথে ফের ভোটগ্রহণ হবে। তবে, এদিনের হিংসার পরে শান্তমনু যোগ করেন, আগামী ১২ এপ্রিল অনন্তনাগের লোকসভা আসনের উপ-নির্বাচন এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
এদিকে, এদিনের হামলার ঘটনায় প্রশাসনকেই দুষেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এই কেন্দ্রের প্রার্থী ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুখ আবদুল্লা। তাঁর দাবি, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ মেহবুবা মুফতি প্রশাসন।