গুন্টুর: স্কুল পড়ুয়া ছেলের আকস্মিক মৃত্যুর ঠিক ৪৫ দিন পর আত্মঘাতী হলেন দম্পতি। তাঁদের আত্মহত্যার দিনটি ছিল বৈকুন্ঠ একাদশী। এই ঘটনা ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গুন্টুরে। সূত্রের খবর, মৃত ছেলের সঙ্গে স্বর্গে দেখা হবে, এই বিশ্বাস থেকেই চরম পদক্ষেপ নিয়েছেন ওই দম্পতি। গত দুই সপ্তাহ ধরে তাঁরা আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। শেষপর্যন্ত গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন তাঁরা।
জানা গেছে, ওই দম্পতি নুনে চন্দ্রশেখর রাও ও নবীনার সন্তান ১৪ বছরের বামসি কৃষ্ণা একটি বেসরকারি কর্পোরেট স্কুলের নবম শ্রেণীতে পড়ত। স্কুল পরিচালিত হোস্টেলে থেকেই সে পড়াশোনা করত। গত বছরের নভেম্বরে প্রায় এক সপ্তাহ বামসির ভাইরাল জ্বর হয়েছিল। তার শারীরিক অবস্থার চরম অবনতির আগে স্কুল কর্তৃপক্ষ বাবা-মাকে কোনও খবর দেয়নি। শেষপর্যন্ত খবর পেয়ে যখন চন্দ্রশেখর ও নবীনা ছেলের কাছে পৌঁছন তখন সে প্রায় মৃত্যুশয্যায়।
গত ২২ নভেম্বর রক্তের শ্বেতকণিকার পরিমাণ একেবারেই কমে যাওয়ায় বামসির মৃত্যু হয়। একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়েন দম্পতি। তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ আনেন। পুলিশ স্কুলের প্রিন্সিপাল ও কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করে। কিন্তু ওপর মহলের চাপে ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিস গড়িমসি করে বলে অভিযোগ। গত এক মাস ধরে চন্দ্রশেখর রাও পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ নিয়ে সরব থেকেছেন। যদিও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশের বক্তব্য, ইতিমধ্যেই প্রিন্সিপাল ও কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু ফরেনসিক পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় নি।
ছেলের মৃত্যুর শোক, তার ওপর পুলিশের গাফিলতি-এই দুই কারণে চূড়ান্ত অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন চন্দ্রশেখর রাও ও নবীনা।
শেষপর্যন্ত বৈকুন্ঠ একাদশীর দিন তাঁরা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনার দিন ভোরে উঠে তাঁরা বাড়িতে পুজোর পর সিলিং ফ্যান থেকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।