দেশের সব পুলিশ স্টেশন এবং সিবিআই (CBI), এনআইএ (NIA), ইডি(ED)-র মতো সব তদন্তকারী সংস্থাকে তাদের অফিসে সিসিটিভি (CCTV) ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশ দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। জিজ্ঞাসাবাদ ক্যামেরাবন্দি করে রাখার পাশাপাশি তা পরের ১৮ মাস সংরক্ষণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট তাদের নির্দেশে জানিয়েছে, নাইট ভিশন ও অডিও রেকর্ডিং-র ক্ষমতা সম্পন্ন সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে হবে। তদন্তকক্ষ, লক আপ এবং প্রত্যেক ঢোকা বেরোনোর জায়গায় যে ক্যামেরা থাকতে হবে।
তদন্ত বা জিজ্ঞাসাবাদের নামে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যক্তিস্বার্থ ক্ষুণ্ণ হওয়ার অভিযোগ ওঠে। সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে তা যাতে বজায় থাকে তাই এই পদক্ষেপ। কিছুদিন আগেই তামিলনাড়ুতে লকআপে পুলিশি অত্যাচারে বাবা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে উত্তাল হয়েছিল দেশ। সেক্ষেত্রে মেলেনি কোনও সিসিটিভি ফুটেজ।
২০১৮ সালে পঞ্জাবে জিজ্ঞাসাবাদের মাঝে লকআপে এক ব্যক্তির মৃত্যুতে উঠেছিল পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ। যে তদন্ত ক্যামেরাবন্দি করার কথা নির্দেশ থাকলেও তেমনটা হয়নি। সেই মামলার বিচারের মাঝেই গত দু-বছরের বেশি সময়ে গোটা পরিস্থিতিতে সেভাবে বদল না আসাতেই এরকম কড়া নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতিরা বলেছেন, ‘বেশিরভাগ তদন্তকারী সংস্থা তাদের অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাই প্রত্যেকটি অফিসে পুলিশ স্টেশনের মতোই সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে হবে তাদেরও। পুলিশ স্টেশনের ঢোকা-বেরোনোর পথ, লকআপ, করিডর, রিসেপশন, ইনস্পেক্টরদের ঘর ও ওয়াশরুমের বাইরে লাগাতে হবে ক্যামেরা।’
সিবিআই, ইডি, এনআইএ, এনসিবি-র মতো সব সংস্থার ক্ষেত্রেও যে নির্দেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদের সময় থেকে পরের ১৮ মাস পর্যন্ত তদন্তের যে নথি সংরক্ষণ করতে হবে বলেও জানিয়েছে তারা।
তদন্তকারী সংস্থাদের মতোই সব রাজ্যকে পুলিশ স্টেশনে সিসিটিভি বসানোর কাজের অগ্রগতি নিয়ে আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা করার নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যগুলিকে ক্যামেরা-খাতে দ্রুত অর্থ বরাদ্দের জন্যও জানিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।