শ্রীনগর: তালিবান যেভাবে পাকিস্তান, আফগানিস্তানে স্কুলশিক্ষা ব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড আঘাত হেনেছে, সেই একই ধাঁচে কাশ্মীরের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করতে চাইছে উপত্যকার জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি। এজন্য তারা স্কুলগুলি ধ্বংস করার খেলায় মেতেছে। গত ২৪ ঘন্টায় আরও একটি স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা। এনিয়ে, গত ৩ মাসে অশান্তির সময় ১৯ টি স্কুল পুড়িয়ে দিল জঙ্গিরা।

পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল রাতে বারামুল্লা জেলার তাপেরে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে আগুন ধরিয়ে দেয় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। তিনকক্ষের স্কুলটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে।

জুলাইয়ের শুরুতে হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত উপত্যকার যাবতীয় স্কুল বন্ধ। সরকারি আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, অন্তত ২০ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে স্কুলে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে কাশ্মীরের গুরেজ, তাংধার, উরি ও জম্মু আর লাদাখের ছেলেমেয়েরা অবশ্য ঠিকমতোই স্কুলে যাচ্ছে। জঙ্গিদের প্রভাব প্রতিপত্তি শুধু উপত্যকাতেই সীমাবদ্ধ।

তথ্য জানাচ্ছে, হিংস্র বিক্ষোভকারীদের ক্রমাগত পাথর ছোঁড়ার জেরে মঙ্গলবারেও বন্ধ হয়ে গিয়েছে দুটি সরকারি স্কুল। এ দুটির মধ্যে একটি শ্রীনগরের নূরবাগ এলাকায়, অন্যটি উচ্চমাধ্যমিক স্কুল, সেটি রয়েছে অনন্তনাগের আয়েশমুকাম এলাকায়। হুরিয়ত কনফারেন্স সহ বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন এলাকার সব স্কুল কলেজ বন্ধ রাখার ফরমান জারি করেছে।

উপত্যকার স্কুল কলেজ খোলার চেষ্টা করায় সেপ্টেম্বর মাসে লস্কর ই তৈবা হুমকি দেয় জম্মু কাশ্মীরের শিক্ষামন্ত্রী নইম আখতারকে। লস্করের মুখপাত্র দাবি করে, নিজেদের ভালমন্দ বোঝার জন্য কাশ্মীরীরা যথেষ্ট শিক্ষিত। যদি নইম আখতার কথা না শোনেন, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপরেও একটি খোলা চিঠিতে নইম আখতার পাকিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানিকে অনুরোধ করেন, যাতে উপত্যকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খুলতে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। যে সব বাবা মায়ের সামর্থ্য রয়েছে, পড়াশোনার জন্য ছেলেমেয়েদের জম্মু ও দিল্লিতে পাঠাতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।