মথুরা: বৃন্দাবনের আশ্রমে এক বিবাহিতা মহিলাকে নিগ্রহ ও ধর্ষণের অপরাধে এক তান্ত্রিকের ২৫ বছরের কারাদণ্ড দিল স্থানীয় ফাস্ট ট্র্যাক আদালত। জেলার অতিরিক্ত কৌসুলি প্রবীণ কুমার সিংহ জানিয়েছেন, ফাস্ট ট্রাক আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারপতি ওই তান্ত্রিকের ২৫ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে। ওই টাকা অনাদায়ে আরও ২৭ মাস কারাবাস করতে হবে দোষীকে।
হাতরাসের নির্যাতিতা মহিলা ধারাবাহিক পেটের ব্যাথায় ভুগছিলেন। সমস্যার সুরাহার আশায় গত বছরের জুলাইয়ে স্বামী ও চার বছরের কন্যাকে নিয়ে তিনি অভিযুক্তর বৃন্দাবনের আশ্রমে আসেন। ওই মহিলাকে তান্ত্রিকের এক শিষ্য জানায় যে, 'অপশক্তি'র প্রভাব ছাড়ানোর 'ঝাড়ফুঁক' রাত ১০ টায় শুরু হবে। এজন্য মহিলাকে আশ্রমের তিনতলার একটি ঘরে থাকতে বলা হয়।
নির্য।তিতার দায়ের করা অভিযোগ অনুযায়ী এ কথা জানিয়েছেন সিংহ।
রাতে ওই মহিলার স্বামীকে একট মাটির জ্বলন্ত প্রদীপ হাতে দিয়ে নিচের তলায় চলে যেতে বলা হয়। তাঁকে বলা হয়, ওই প্রদীপ না নেভা পর্যন্ত তাঁর ফেরা চলবে না।
এরপরই অভিযুক্ত বাবা দ্বারকাদাস ওই মহিলাকে নিগ্রহ করেন। মহিলা এর প্রতিবাদ করেন। এরপরও অভিযুক্ত মহিলাকে ধর্ষণ করে। নির্যাতিতাকে বলা হয়, 'অপশক্তি' তাড়ানোর একটি একটা উপায়।
পরের দিন সকালে অন্য একটি 'ঝাড়ফুঁকে'র নামে মহিলাকে ফের ধর্ষণ করা হয়। অভিযুক্ত পরিবারকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে মহিলাকে মুখবন্ধ রাখার হুমকি দেয়। এরপর ওই মহিলা হাতরাসে ফিরে যান এবং বাড়িতে ফিরে সাহসে ভর করে পুরো ঘটনার কথা তিনি তাঁর স্বামীকে জানান।
গত বছরের ২২ জুলাই বৃন্দাবনে এসে বাবা দ্বারকাদাসের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন।
সিংহ জানিয়েছেন, বিচারপর্বের একেবারে শেষের দিকে ওই মহিলা জানান, তাঁকে ধর্ষণ করেছে অন্য কোনও ব্যক্তি। কিন্তু পুলিশের পেশ করা তথ্যপ্রমাণ, চিকিত্সকের বয়ান ও মহিলার আগের বয়ানের ভিত্তিতে আদালত ধর্ষণের অপরাধে তান্ত্রিকের ২০ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা ঘোষণা করে। আনদায়ে আরও দেড় বছর কারাবাস।
এছাড়াও হুমকি দেওয়ার জন্য তান্ত্রিকের আর চার বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। সেইসঙ্গে ৪ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাবাসের সাজাও দেওয়া হয়েছে তাকে। পাশাপাশি, প্রতারণার দায়ে আরও একবছরের কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকার জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছে ওই তান্ত্রিককে। প্রত্যেকটি সাজা আলাদা আলাদাভাবে কার্যকর হবে।