হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ৯ বছরের অভিজ্ঞানকিশোর দাস। এই ৯ বছর বয়সেই মানসিক হেনস্থার অভিজ্ঞতার সম্মুখীন অভিজ্ঞান! কিন্তু, কী কসুর চতুর্থ শ্রেণির এই ছাত্রের? সেপ্টেম্বর থেক কাশি-শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছে অভিজ্ঞানকিশোর।
পরিবারের দাবি, দক্ষিণ কলকাতার হাসপাতালের চিকিত্সক জানান, অভিজ্ঞানের যক্ষ্মা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগে পড়ে যায় পরিবার। হাওড়া জেলা হাসপাতাল, চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল, এনআরএস, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের চিকিত্সককে দেখানো হয়। কিন্তু, নানা জায়গায় নানা পরামর্শ। বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন অভিজ্ঞানের অভিভাবকরা।
এরপর চুঁচুড়া থেকে অভিজ্ঞানকে ভেলোরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের দাবি, চিকিত্সকরা জানিয়ে দেন অভিজ্ঞানের এমন কোনও অসুখ হয়নি। কিন্তু এই স্বস্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ২ মাস ছুটিতে থাকার পর স্কুলে গিয়ে চূড়ান্ত মানসিক হেনস্থার মুখে পড়তে চতুর্থ শ্রেণির এই ছাত্রকে। অভিযোগ, অঙ্কের শিক্ষক কিংশুক পাল বলেন, তুই অন্য স্কুলে ভর্তি হয়েছিলি? এখানে আর ক্লাস করবি না।
তখন অভিজ্ঞানকিশোর বলে, আমি চিকিত্সার জন্য ছুটিতে ছিলাম। অভিযোগ তখনই অঙ্কের শিক্ষক বলেন, তোর বাজে রোগ হয়েছে, তুই আর স্কুলে আসবি না। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুলশিক্ষক কিংশুক পাল।
যদি কিছু নাই হয়ে থাকে তাহলে কেন স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে অভিজ্ঞান? তার যদি যক্ষ্মা হতও, তাহলেও তাঁকে স্কুলে আসতে না বলার কোনও অধিকার কি শিক্ষকের আছে? একুশেও কি আমাদের গ্রাস করে রয়েছে অজ্ঞতার অন্ধকার?
যদিও ছাত্রের পরিবারের দাবি, এনিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানিয়েও কাজ হয়নি। এরপর গোটা বিষয়টি জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জানান অভিজ্ঞানের বাবা অনিন্দ্যকিশোর দাস। গোটা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তত্পর হয়েছে জেলা প্রশাসন। সর্বশিক্ষা মিশনের প্রজেক্ট অফিসারকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার এবং ছাত্রের স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন হুগলির জেলাশাসক।