শ্রীনগর:  সোমবার রাতে অমরনাথ যাত্রীদের ওপর হিজবুল মুজাহিদিনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হামলা চালায় লস্কর জঙ্গিরা। মাস্টারমাইন্ড পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি ইসমাইল। হামলা চালিয়ে পুণ্যার্থীদের পণবন্দি করার চক্রান্ত ছিল তাদের। মজুত ছিল ৩দিনের খাবার, সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের কাছে দাবি জম্মু-কাশ্মীরের আইজি মুনির খানের।

সোমবার অনন্তনাগ জেলার হামলায় ৭ অমরনাথ যাত্রীর মৃত্যু হয়, জখম হন ১৯ জন। যে বাসটি লক্ষ্য করে জঙ্গিরা হামলায় চালায়, সেটি বালতল থেকে জম্মুর দিকে যাচ্ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, বাসটি অমরনাথ বোর্ডের আওতায় অন্তর্ভূক্তও করা ছিল না, এরফলে বাসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল না। প্রসঙ্গত, সন্ধে সাতটার পর জাতীয় সড়কের ওপর বাস চলার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু বাসটি ব্রেকডাউন হয়ে যাওয়ায়, সময়ের পর সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। এই হামলার প্রতিবাদে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, জম্মু-কাশ্মীর জাতীয় প্যান্থর পার্টি, ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং কংগ্রেস মঙ্গলবার জম্মুতে বনধের ডাক দিয়েছে।

পুলিশের দাবি হিজবুলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সন্ত্রাস হামলাটি চালিয়েছে লস্কর জঙ্গিরা। হামলার মূল চক্রী আবু ইসমাইল। জানা গিয়েছে, পুর্ণ্যার্থীদের বাসটি তিনদিক দিয়ে ঘিরে ফেলেছিল জঙ্গিরা। অনন্তনাগে একটি সিকিউরিটি চেকপোস্টের কাছে হামলার ঘটনাটি ঘটে, পহেলগাঁও থেকে ৫০ কিমি দূরত্বে। এই জঙ্গিদলটিই রাত সাড়ে আটটা নাগাদ পুলিশের একটি গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে।



তবে এই হামলার পরও অমরনাথ যাত্রীরা ফের তাদের যাত্রা শুরু করে আজ সকাল থেকে। তবে তাদের নিরাপত্তার জন্যে গাড়ির সংখ্যা অর্ধেকের বেশি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। হামলার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে নয়াদিল্লিতে জরুরি বৈঠকও ডাকা হয়। প্রায় ৪০ হাজার সেনাবাহিনী পুর্ণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে। এরসঙ্গে এই বছর নিরাপত্তার খাতিরে ড্রোন এবং স্যাটেলাইট ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

আইজি মুনির খানের দাবি, প্রতিশোধ নিতেই এই হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছে লস্কর জঙ্গিরা। দিন কয়েক আগেই লস্কর জঙ্গিদের একটি ঘাঁটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ থেকে সন্দীপ কুমার শর্মাকে গ্রেফতার করার পরও গোয়েন্দাসংস্থার হাতে অনন্তনাগে সন্ত্রাস হামলা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য আসে।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ জুন আইজি তাঁর দফতরের কর্মীদের সতর্ক করে একটি চিঠিও লেখেন। সেখানেই দাবি করা হয়, হামলা চালিয়ে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ পুর্ণ্যার্থী নিকেশ করার পরিকল্পনা রয়েছে জঙ্গিদের, সঙ্গে ২০০ পুলিশকর্মীর ওপরও হামলা চালানোর ছক রয়েছে। এমনকি তীর্থযাত্রীদের কনভয়ের ওপর হামলার ছকের কথাও সেই চিঠিতে উল্লেখ করা ছিল।

এই হামলার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতি। গত মাসের শেষের দিকে এই তীর্থ যাত্রা শুরু হয়েছে, চলবে অগাস্টের শেষ পর্যন্ত।