শ্রীনগর: এ যেন উলটপুরাণ। উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারায় একটি গ্রামে এক পুলিশ কর্মীর মৃত্যুর পর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে, রাগে ফুঁসছেন স্থানীয়রা।
এতদিন কাশ্মীরে জঙ্গিদের মৃত্যুতেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর দীর্ঘ পাঁচ মাসে বিক্ষোভ ছড়ায় উপত্যকায়। সেই ধারার সম্পূর্ণ বিপরীতে রবিবার নিহত পুলিশ কর্মী আব্দুল করিমের শেষকৃত্যে যোগ দিলেন কয়েক হাজার মানুষ।
গত শনিবার কুপওয়ারা-শ্রীনগর রোডে চোগুল মোড়ে কয়েকজন জঙ্গিকে ধরে ফেলেন কনস্টেবল আব্দুল করিম। কিন্তু জঙ্গিরা ৪০ বছরের করিমকে গুলি করে হত্যা করে।  তাঁর এক আত্মীয় ক্ষোভের সুরে বলেছেন, 'যেই ওকে মেরে থাকুক, আমি তাকে মুজাহিদ বলতে পারব না। সে একজন জঙ্গি। এর ফল যাই হোক না কেন, আমি এ কথা হাজারবার বলব। এটা সন্ত্রাসবাদ, আর এই সন্ত্রাসবাদ বন্ধ হওয়া উচিত'।
বিগত কয়েক বছরে জঙ্গিদের শেষকৃত্যে ব্যাপক ভিড় রাজ্য সরকার ও নয়াদিল্লির উদ্বেগ বাড়িয়েছে। গত জুলাই থেকে বিক্ষোভের সময় স্থানীয় পুলিশের প্রতি বিরূপ মনোভাব এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে পুলিশ কর্মীরা বাড়ি ফিরতে পারতেন না। গত জুলাই থেকে একাধিক পুলিশ কর্মীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
কিন্তু করিমের মৃত্যুর ঘটনায় দেখা গেল একেবারে ভিন্ন চিত্র। তাঁর প্রতিবেশী আব্দুল গনি শেখ বলেছেন, 'ওরা যদি বলে কাউকে হত্যা করাটা জিহাদ, তাহলে আমরা তা মানতে পারব না। এখন তাঁদের সন্তানদের লালনপালন করবে কে'?
স্থানীয়  বাসিন্দা  মহম্মদ জামাল বলেছেন, 'এটা কোনও জিহাদ নয়। এটা ইসলামের পরিপন্থী। যে জিহাদে মানুষ খুন করা হয় আমরা তার বিদায় চাই'।
করিম পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগে ১২ বছর এসপিও হিসেবে কাজ করেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, করিম কোনওদিনই কাউকে নিগ্রহ করেননি। বরং অন্যের উপকার করতে ছুটে আসতেন।